যুদ্ধ-সংকটের মধ্যে শিন বেট প্রধানকে সরিয়ে দিল ইসরায়েল সরকার!

ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেটের প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে দেশটির সরকার। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রস্তাবের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা ইতোমধ্যে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

গত সপ্তাহে নেতানিয়াহু বার-এর ওপর আস্থা হারানোর কথা জানান। এর পরেই এই বরখাস্তের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ।

রবিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে বারকে অপসারণের প্রস্তাবটি পাস হয়। আগামী ১০ এপ্রিলের মধ্যে নতুন কাউকে এই পদে নিয়োগ দেওয়া হবে, অথবা ততদিন পর্যন্ত বার-কে স্বপদে বহাল থাকতে হবে।

শিন বেটের প্রধান হিসেবে বার-এর মেয়াদ ২০২৩ সাল পর্যন্ত ছিল। তিনি এর আগে নেতানিয়াহুর বিরোধী সরকারের সময়ে নিয়োগ পেয়েছিলেন।

নেতানিয়াহুর সঙ্গে বার-এর সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না। বিশেষ করে বিতর্কিত বিচার বিভাগীয় সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে তাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। এছাড়া, গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার ঘটনা প্রতিরোধে শিন বেটের ব্যর্থতা নিয়ে অভ্যন্তরীণ একটি প্রতিবেদনের জেরে তাদের মধ্যেকার সম্পর্ক আরও খারাপ হয়।

ওই প্রতিবেদনে হামাসের সামরিক শক্তি বৃদ্ধিতে নীরবতাকে দায়ী করা হয়েছিল।

বারকে বরখাস্তের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে জেরুজালেমে বিক্ষোভকারীরা সমবেত হয়ে নেতানিয়াহুর সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের সমালোচনা করেন।

বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলের গণতন্ত্রের জন্য হুমকি স্বরূপ একাধিক ‘লাল পতাকা’র ইঙ্গিত দেন। তাদের অভিযোগ, নেতানিয়াহু ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চাইছেন।

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, বারকে অপসারণের এই পদক্ষেপটিও এর অংশ। এমনকি, অ্যাটর্নি জেনারেল গালি বাহারভ-মিয়ারাও বারকে অপসারণের বিরোধিতা করেছিলেন।

এদিকে, নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলা চলছে। তিনি বর্তমানে আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন।

ইসরায়েল ডেমোক্রেসি ইনস্টিটিউটের আইন বিশেষজ্ঞ ড. আমির ফুচস বলেছেন, নেতানিয়াহু ক্ষমতাকে কেন্দ্রীভূত করতে চাইছেন এবং বিরোধীদের সরিয়ে দিচ্ছেন।

যা ইসরায়েলের স্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়, বরং প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত স্বার্থের সঙ্গে জড়িত।

অন্যদিকে, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় গত কয়েক দিনে অন্তত ৫৯২ জন নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে এখনো ৫৯ জন ইসরায়েলি জিম্মি রয়েছে। গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ায় বিক্ষোভকারীরা নতুন করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *