সিরিয়ায় বোমা: ড্রুজদের বাঁচাতে ইসরায়েলের আক্রমণ, বাড়ছে উত্তেজনা!

সিরিয়ার অভ্যন্তরে ইসরায়েলের বিমান হামলা, সংখ্যালঘু ড্রুজ সম্প্রদায়ের সুরক্ষার বার্তা।

গত কয়েকদিনে সিরিয়ায় ইসরায়েলের বিমান হামলার তীব্রতা বেড়েছে। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, তারা সিরিয়ার সংখ্যালঘু ড্রুজ সম্প্রদায়ের সুরক্ষার জন্য এই পদক্ষেপ নিয়েছে।

শুক্রবার গভীর রাতে দামেস্কের কাছে সিরিয়ার একটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়। এছাড়াও, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলেও বিমান হামলার খবর পাওয়া গেছে।

সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ইসরায়েলি বোমা হামলায় অন্তত একজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে আরও চারজন।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বলছে, সিরিয়ার নতুন সরকারের প্রতি একটি সতর্কবার্তা হিসেবে এই হামলা চালানো হয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়েভ গ্যালান্ট এক যৌথ বিবৃতিতে জানান, ড্রুজ সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নিলে তা বরদাস্ত করা হবে না।

তারা আরও বলেন, “সিরিয়ার সরকারকে আমরা স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই। দামেস্কের দক্ষিণে কোনো শক্তি মোতায়েন করা হলে বা ড্রুজ সম্প্রদায়ের উপর কোনো হুমকি সৃষ্টি হলে, আমরা তা হতে দেব না।”

অন্যদিকে, সিরিয়ার সরকার ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, এই হামলা “রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একটি মারাত্মক আগ্রাসন” এবং এটি দেশের স্থিতিশীলতাকে ধ্বংস করার চেষ্টা।

জাতিসংঘের সিরিয়া বিষয়ক আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশনের প্রধান, পাওলো সের্গিও পিনheiro, আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলের এই হামলাকে “পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য” বলে মন্তব্য করেছেন।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আইনে এ ধরনের আগাম হামলার কোনো সুযোগ নেই।

উল্লেখ্য, ড্রুজ সম্প্রদায় একাদশ শতকে শিয়া ইসলাম থেকে উদ্ভূত একটি ধর্মীয় গোষ্ঠী।

সারা বিশ্বে প্রায় ১০ লক্ষাধিক ড্রুজের বসবাস। এদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি সিরিয়ায় বাস করে, বিশেষ করে সুয়েদা প্রদেশে এবং দামেস্কের কিছু অঞ্চলে।

সম্প্রতি, দামেস্কের কাছে ড্রুজ অধ্যুষিত এলাকায় সরকারপন্থী মিলিশিয়া এবং ড্রুজ যোদ্ধাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এর আগে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত একটি অডিও ক্লিপকে কেন্দ্র করে এই উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, যেখানে হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে।

বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হলো সিরিয়ার নতুন সরকারকে দুর্বল করা এবং একইসাথে দেশটির অভ্যন্তরে একটি সম্ভাব্য মিত্র তৈরি করা।

তবে, এই কৌশল নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, সিরিয়ায় স্থিতিশীলতা বজায় থাকলে তা ইসরায়েলের স্বার্থ রক্ষা করবে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *