বিরল এক ঘটনা: সরাসরি বৈঠকে ইসরায়েল ও সিরিয়ার প্রতিনিধিরা।
মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যে এবার ইসরায়েল ও সিরিয়ার মধ্যে সরাসরি আলোচনার খবর পাওয়া গেছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সিএনএন সূত্রে জানা যায়, আজারবাইজানে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং সিরিয়ার সরকারি প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
তুরস্কের কর্মকর্তারাও এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনায় ইসরায়েলের পক্ষে নেতৃত্ব দেন মেজর জেনারেল ওদেদ বাসিয়ুক। সিরিয়ার পক্ষ থেকে কারা প্রতিনিধিত্ব করেছেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
তবে, উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে সম্প্রতি দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন আহমাদ আল-শারারা। তিনি এর আগে জানিয়েছিলেন, সিরিয়া সরকার ইসরায়েলের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনা চালাচ্ছে, যাতে দেশটিতে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বন্ধ করা যায়।
তবে, সরাসরি বৈঠকের খবরটি এই প্রথম প্রকাশ্যে এল।
এই আলোচনার প্রেক্ষাপটে, যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। জানা গেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার কথা বিবেচনা করছেন।
এর কারণ হিসেবে জানা যায়, তিনি সিরিয়ার সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করতে চান। উল্লেখ্য, ট্রাম্প সম্প্রতি সৌদি আরবে আহমাদ আল-শারারার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
অন্যদিকে, সিরিয়ায় ইসরায়েলের সামরিক উপস্থিতি ক্রমশ বাড়ছে। দেশটির সেনাবাহিনী সিরিয়ার অভ্যন্তরে বেশ কিছু এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
ইসরায়েল দাবি করছে, তারা তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সিরিয়ার সংখ্যালঘু দ্রুজ সম্প্রদায়ের সুরক্ষার জন্য এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এছাড়া, ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে সিরিয়ার কাছ থেকে দখল করা গোলান মালভূমিকে ইসরায়েল নিজেদের অংশ হিসেবে ঘোষণা করেছে।
তবে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হলে তা বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
তিনি মনে করেন, এর ফলে হামাস-এর মতো জঙ্গিগোষ্ঠী আবারও সক্রিয় হতে পারে। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছিল।
নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে তাই নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার অনুরোধ করেছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞাগুলো সম্পূর্ণরূপে তুলে না নিলেও, কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দিতে পারে বলে জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে, তারা সিরিয়ার অর্থনীতি, আর্থিক খাত এবং অবকাঠামো পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কাজ করছে।
মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে এই আলোচনা এবং ঘটনাগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখন দেখার বিষয়, এই আলোচনার ফলস্বরূপ দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক কোন দিকে মোড় নেয়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন