গাজায় যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনিদের অন্য দেশে পুনর্বাসনের বিষয়ে কয়েকটি দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
তবে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে নেওয়ার এই পরিকল্পনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন ও আরব দেশগুলো। খবরটি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সিএনএন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় বসবাস করা ২০ লক্ষাধিক মানুষের মধ্যে যাদের অন্য দেশে পুনর্বাসনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে, তাদের গ্রহণ করতে রাজি এমন কয়েকটি দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
ইসরায়েলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই দেশগুলোকে আর্থিক ও আন্তর্জাতিক সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
সম্ভাব্য দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ সুদান, সোমালিল্যান্ড, ইথিওপিয়া, লিবিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া।
তবে ফিলিস্তিনিদের পুনর্বাসনের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছে দক্ষিণ সুদান।
এছাড়া, এর আগে সোমালিল্যান্ডও একই কথা জানিয়েছিল।
অন্যদিকে, ইন্দোনেশিয়া জানিয়েছে, তারা চিকিৎসার জন্য গাজা থেকে ২ হাজার ফিলিস্তিনিকে নিতে প্রস্তুত, তবে সুস্থ হয়ে উঠলে তাদের গাজায় ফেরত যেতে হবে।
এই বিষয়ে নেতানিয়াহু বলেন, ফিলিস্তিনিদের ‘সরিয়ে দেওয়া’ হচ্ছে না, বরং তাদের ‘চলে যেতে দেওয়া হচ্ছে’।
তিনি আরও বলেন, যারা ফিলিস্তিনিদের সাহায্য করতে চান, তারা যেন তাদের দরজা খুলে দেন।
গাজা শহরের বিষয়ে ইসরায়েলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে।
কারণ, ইসরায়েল ইতোমধ্যেই গাজা শহর দখলের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে, যেখানে যুদ্ধের কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়া বিপুল সংখ্যক ফিলিস্তিনিসহ প্রায় ১০ লাখ মানুষ বসবাস করে।
এদিকে, নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের উপদেষ্টা শাইনা লো-এর মতে, ফিলিস্তিনিদের গাজার ভেতরে বা অন্য কোনো দেশে স্থানান্তরের পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী এবং এটি ফিলিস্তিনিদের কাছেও গ্রহণযোগ্য নয়।
অন্যদিকে, সম্প্রতি নেতানিয়াহু এক সাক্ষাৎকারে বৃহত্তর ইসরায়েল ধারণার প্রতি সমর্থন জানান।
এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন আরব দেশ।
মিশর ইসরায়েলের কাছে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে এবং সৌদি আরব এই ধরনের ‘সম্প্রসারণবাদী পরিকল্পনার’ তীব্র বিরোধিতা করেছে।
কাতার একে ‘আগ্রাসী মনোভাব’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় ব্যাপক হারে বাস্তুচ্যুতি ঘটিয়ে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনেছে।
গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠানোর ক্ষেত্রেও ইসরায়েল বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন