গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এক চিকিৎসকের ৯ সন্তানের মৃত্যু, বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড়
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এক চিকিৎসকের ৯ সন্তানের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। নিহত শিশুদের মধ্যে সাত মাস থেকে বারো বছর বয়সী শিশুরাও ছিল।
শুক্রবার খান ইউনিসে চালানো এই হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন শিশুদের বাবা। বর্তমানে হাসপাতালে জীবন-মরণ লড়াইয়ে লড়ছে তাদের একমাত্র জীবিত সন্তান, ১১ বছর বয়সী আদম। গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিহত শিশুদের মা, ডা. আলাা আল-নাজ্জার, খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন।
হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক বিভাগের প্রধান আহমেদ আল-ফাররা জানিয়েছেন, ওই হামলায় ডা. নাজ্জারের পরিবারের প্রায় সবাই নিহত হয়েছেন। গাজার মিডিয়া অফিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিহত শিশুদের মধ্যে দুইজনের মরদেহ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে রয়েছে।
গাজা সরকারের মিডিয়া অফিস এই ঘটনাকে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে চলমান গণহত্যার অংশ হিসেবে বর্ণনা করেছে। তারা এটিকে আন্তর্জাতিক আইন ও কনভেনশনের চরম লঙ্ঘন এবং যুদ্ধাপরাধ হিসেবেও অভিহিত করেছে।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিন বিষয়ক বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা অ্যালবানিজ এই হামলাকে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যার নতুন পর্যায়’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন এবং একে ‘নিষ্ঠুর’ বলেও মন্তব্য করেছেন।
হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে চিকিৎসা কর্মী, বেসামরিক নাগরিক এবং তাদের পরিবারকে লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে, যা তাদের মনোবল ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা তাদের সেনাদের কাছে থাকা একটি কাঠামোতে সন্দেহভাজন যোদ্ধাদের ওপর আঘাত হেনেছে, যেখান থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
তবে বেসামরিক নাগরিকদের হতাহতের বিষয়ে তারা পর্যালোচনা করছে বলে জানিয়েছে।
সোমবার, ইসরায়েল গাজার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খান ইউনিস থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয় এবং একটি ‘নজিরবিহীন আক্রমণের’ হুঁশিয়ারি দেয়।
এরপর থেকেই সেখানে ব্যাপক বোমা হামলা চলছে। শুক্রবার ও শনিবারের হামলায় নিহতদের মধ্যে আল-নাজ্জারের সন্তানেরাও ছিল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৭৯ জনের মরদেহ হাসপাতালে আনা হয়েছে।
তবে উত্তর গাজার হাসপাতালগুলোতে হতাহতের সংখ্যা এখনো যোগ করা হয়নি। অক্টোবর ২০২৩ থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় মৃতের সংখ্যা ৫৩,৯০৪ জনে দাঁড়িয়েছে এবং আহত হয়েছেন ১,২২,৫৯৩ জন।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা