লেবাননে আবারও ইসরায়েলি বিমান হামলা, নিহত জামায়াতে ইসলামিয়ার শীর্ষ নেতা।
লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণে একটি ড্রোন হামলায় জামায়াতে ইসলামিয়ার সশস্ত্র শাখার একজন শীর্ষ কমান্ডার নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার চালানো এই হামলায় নিহত হন হুসেইন আতোউই।
ইসরায়েলি বাহিনী এই হামলা চালায়। এই ঘটনার পর মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
লেবাননের বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগ নিশ্চিত করেছে যে, বৈরুত থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে দামুর শহরের কাছে একটি গাড়িতে ইসরায়েলি ড্রোন হামলা চালানো হয়।
উদ্ধারকর্মীরা গাড়ির ভেতর থেকে একজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে।
জামায়াতে ইসলামিয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিহত আতোউই ছিলেন একজন ‘শিক্ষাবিদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক’। তিনি কর্মস্থলে যাওয়ার সময় গাড়িতে করে যাওয়ার সময় এই হামলার শিকার হন।
সংবাদ সংস্থা এএফপি’কে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আতোউই জামায়াতে ইসলামিয়ার সশস্ত্র শাখা আল-ফজর ফোর্সের একজন নেতা ছিলেন।
অন্যদিকে, লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় টাইর জেলায় ইসরায়েলি হামলায় আরও একজন নিহত হয়েছেন।
গত নভেম্বরে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও, সীমান্ত অঞ্চলে এখনো মাঝে মাঝেই উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে।
আল-জামায়াতে ইসলামিয়া এক বছরের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একাধিক হামলার দায় স্বীকার করেছে।
এর মধ্যে রয়েছে দুই মাসব্যাপী ব্যাপক যুদ্ধ, যেখানে ইসরায়েলি বিমান হামলায় লেবাননে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়।
যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে বলা হয়েছিল, হিজবুল্লাহ তাদের যোদ্ধা ও সামরিক অবকাঠামো সরিয়ে নেবে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলও লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করবে।
তবে ইসরায়েল এখনো পাঁচটি স্থানে সেনা মোতায়েন রেখেছে, যা তারা ‘কৌশলগত’ভাবে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে।
ইসরায়েল বলছে, সীমান্ত থেকে মাঝে মাঝে রকেট হামলার কারণেই তারা এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে।
সম্প্রতি তারা হিজবুল্লাহর আরও দুইজন শীর্ষ সদস্যকে হত্যা করেছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় লেবাননে অন্তত ৭১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
লেবানন সরকার হিজবুল্লাহসহ অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীকে নিরস্ত্র করতে এবং দক্ষিণাঞ্চলের নিরাপত্তা নিজেদের হাতে নিতে চেষ্টা করছে।
মার্চ মাসের শেষের দিকে ইসরায়েলের দিকে অজ্ঞাতপরিচয় গোষ্ঠীর ছোড়া রকেটের পর, লেবানীয় সেনাবাহিনী বেশ কয়েক জন লেবানিজ ও ফিলিস্তিনি সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের মধ্যে তিনজন হামাস সদস্যও ছিল।
যুক্তরাষ্ট্র হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার জন্য লেবাননের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।
লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন আশা প্রকাশ করেছেন, ২০২৫ সালের মধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।
তবে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, এই কাজটি দ্রুত করা সম্ভব নয় এবং হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করা একটি ‘সংবেদনশীল ও জটিল’ বিষয়।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা।