গাজায় ঈদ উৎসবে ইসরায়েলের ‘রক্তাক্ত’ হামলা: মৃতের সংখ্যা বাড়ছে!

গাজায় ঈদের দিনেও থামেনি ইসরায়েলি বিমান হামলা, নিহত বহু ফিলিস্তিনি।

রমজান মাসের শেষে ঈদ-উল-ফিতরের আনন্দ যখন চারিদিকে, ঠিক তখনই গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলার খবর পাওয়া যাচ্ছে। রবিবার ভোরে চালানো হামলায় বহু ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে।

আল জাজিরার খবর অনুযায়ী, রাফা ও খান ইউনিসে অন্তত ৩৫ জন নিহত হয়েছে।

ফিলিস্তিনের জনগণের ঈদ উদযাপনের মধ্যেই এমন মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হচ্ছে বিশ্ব। একদিকে যখন ঈদের আনন্দ, অন্যদিকে তখন ধ্বংসস্তূপের মধ্যে প্রিয়জন হারানোর বেদনা।

গত সপ্তাহে রাফায় ইসরায়েলি হামলায় ১৫ জন স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যু হয়। ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিআরসিএস)-এর কর্মীরা তাঁদের মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন।

পিআরসিএস জানিয়েছে, স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর হামলা চালানো যুদ্ধাপরাধের শামিল।

গাজায় মানবিক পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। মার্চ মাস থেকে ইসরায়েল সেখানে ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে।

ফলে খাদ্য ও জরুরি সামগ্রীর তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। আল জাজিরার প্রতিনিধি হিন্দ খৌদারি জানিয়েছেন, ঈদের দিনে যেখানে ভালো খাবারের আয়োজন করার কথা, সেখানে মানুষ এক বেলা খাবার জোগাড় করতেও হিমশিম খাচ্ছে।

অন্যদিকে, যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা কার্যত ভেস্তে যাওয়ার পথে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু হামাসকে অস্ত্র ত্যাগ এবং গাজা ছাড়ার শর্ত দিয়েছেন।

একইসঙ্গে, তিনি হামাসের হাতে বন্দী ৫৯ জনের মুক্তির জন্য চাপ অব্যাহত রাখার কথা বলেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে ৩৫ জন এরই মধ্যে মারা গেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন নিয়ে ইসরায়েল একটি নতুন প্রস্তাব দিয়েছে, যেখানে জানুয়ারিতে স্বাক্ষরিত তিন-পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে।

মূল চুক্তিতে বন্দীদের মুক্তি এবং ইসরায়েলি সৈন্য প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনার কথা ছিল। কিন্তু ইসরায়েল চাইছে, যুদ্ধ শেষ করার প্রতিশ্রুতি ছাড়াই হামাস যেন সকল বন্দীকে মুক্তি দেয়। হামাস এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে এবং এর ফলস্বরূপ ইসরায়েল আবারও গাজায় বোমা হামলা শুরু করেছে।

রবিবার নেতানিয়াহু গাজার জন্য ট্রাম্পের ‘স্বেচ্ছায় দেশত্যাগ পরিকল্পনা’ বাস্তবায়নের কথাও বলেন। হামাস নেতারা এই ধরনের মন্তব্যকে ‘অবিরাম সংঘাতের’ পূর্বাভাস হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

হামাসের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা, খলিল আল-হাইয়া জানিয়েছেন, তাঁরা একটি প্রস্তাবের সঙ্গে রাজি হয়েছেন, যেখানে প্রতি সপ্তাহে পাঁচজন ইসরায়েলি বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

তবে ইসরায়েলের অস্ত্র ত্যাগের শর্ত মানতে তারা রাজি নয়।

নেতানিয়াহু অবশ্য ইসরায়েলের আলোচনার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা যুদ্ধ পরিস্থিতিতেও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি, এবং তা কার্যকর হচ্ছে।’

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *