গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংসতা: এক এক করে ১৫ উদ্ধারকর্মীকে হত্যা!

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ১৫ ফিলিস্তিনি প্যারামেডিক ও উদ্ধারকর্মী নিহত হয়েছে, জানিয়েছে জাতিসংঘ। নিহতদের মধ্যে অন্তত একজন জাতিসংঘের কর্মী ছিলেন।

জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা কার্যালয় (ওসিএইচএ)-এর মতে, গত ২৩শে মার্চ রাফাহ শহরের তেল আল-সুলতান এলাকায় ফিলিস্তিনের রেড ক্রিসেন্ট ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা আহত সহকর্মীদের উদ্ধারের জন্য ছুটে গিয়েছিলেন। তখনই তাঁদের অ্যাম্বুলেন্স লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বাহিনী ব্যাপক হামলা চালায়।

সংস্থাটি আরও জানায়, হামলার শিকার হওয়া কর্মীদের গণকবরে পুঁতে ফেলা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে আটজন রেড ক্রিসেন্টের, ছয়জন সিভিল ডিফেন্সের এবং একজন জাতিসংঘের কর্মী ছিলেন।

ফিলিস্তিনের রেড ক্রিসেন্টের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অন্তত একজনকে আটক করে হত্যার প্রমাণ পাওয়া গেছে। নিহতদের একজনের হাত বাঁধা ছিল।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-এর প্রধান ফিলিপ্পে লাজারিনি জানিয়েছেন, রাফায় নিহত হওয়া তাদের এক কর্মীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি একে “মানবিক মর্যাদার চরম লঙ্ঘন” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, সেনারা কয়েকটি গাড়িকে সন্দেহজনকভাবে তাদের দিকে আসতে দেখে গুলি চালায়। তবে, গাড়িগুলো হেডলাইট অথবা জরুরি সংকেত ছাড়াই আসছিল এবং তাদের গতিবিধি ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) সঙ্গে সমন্বিত ছিল না।

এলাকাটি একটি সক্রিয় যুদ্ধক্ষেত্র ছিল বলেও তারা দাবি করেছে।

অন্যদিকে, রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, তেল আল-সুলতান এলাকাটি নিরাপদ ছিল এবং সেখানে স্বাভাবিকভাবে চলাচল করা যেত, যার জন্য কোনো সমন্বয়ের প্রয়োজন ছিল না।

হামলার ঘটনার পর রেড ক্রিসেন্ট কর্মীদের মরদেহ সংগ্রহ করতে কয়েক দিন বাধা দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন ফিলিস্তিনের রেড ক্রিসেন্টের প্রেসিডেন্ট ইউনিস আল-খতিব। ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তারা মরদেহগুলি সরানোর ব্যবস্থা করেছে।

রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, মরদেহগুলো বালিতে পুঁতে রাখা ছিল এবং তাদের শরীরে পচন ধরেছিল। তাদের ময়নাতদন্তের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে।

হতাহতদের মধ্যে রেড ক্রিসেন্টের নিহত কর্মীদের নাম হলো: মুস্তাফা খাফাজা, ইজউদ্দিন শাত, সালেহ মুয়াম্মার, রিফাত রাদওয়ান, মোহাম্মদ বাহলুল, আশরাফ আবু লাবদা, মোহাম্মদ হিলিয়েহ এবং রায়েদ আল-শরিফ।

আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মতে, ২০১৭ সালের পর থেকে রেড ক্রস বা রেড ক্রিসেন্ট কর্মীদের ওপর এটিই সবচেয়ে মারাত্মক হামলা।

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, গত ১৮ মাসে গাজায় ইসরায়েলি অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ১,০৬০ জনের বেশি স্বাস্থ্যকর্মী নিহত হয়েছেন।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *