পশ্চিম তীরে মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্রগুলোতে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান, নিহত ১, আহত ৩০ জনের বেশি।
ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে বিভিন্ন মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্রগুলোতে অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী। মঙ্গলবার চালানো এই অভিযানে গুলি ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করা হয়, এতে অন্তত একজন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৩০ জনের বেশি আহত হয়েছে।
নাবলুস শহরে চালানো এক অভিযানে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রামাল্লাহ, নাবলুস, হেবরন, আররাবাহ, এল-বিরেহ, বেথলেহেম, জেনিন এবং টুবাস শহরে অবস্থিত বিভিন্ন মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্রগুলোতে মঙ্গলবার অভিযান চালানো হয়। নাবলুস শহরের একটি বিদেশি মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্রে অভিযানকালে ইসরায়েলি সেনারা গুলি চালায় এবং কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে।
জানা গেছে, আল-খালেজ কোম্পানির মালিকানাধীন একটি মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র এবং একটি স্বর্ণের দোকানেও তারা হামলা চালায়। জেনিনের কেন্দ্রস্থলে তারা ধোঁয়ার বোমা নিক্ষেপ করে এবং টুবাস ও বেথলেমে রাস্তা বন্ধ করে দেয়।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নাবলুসে চালানো অভিযানে একজন নিহত হয়েছে এবং আটজন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে। ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানিয়েছে, টিয়ার গ্যাসে আক্রান্ত ২০ জন এবং রাবার বুলেটে আহত আরও তিনজন চিকিৎসা নিয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এই অভিযানগুলো চালিয়েছে কারণ তাদের ধারণা ছিল, এই মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্রগুলো “সন্ত্রাসে” সহায়তা করছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর রেডিওতে বলা হয়েছে, অভিযানগুলোতে বিপুল পরিমাণ অর্থ জব্দ করা হয়েছে, যা পশ্চিম তীরে “সন্ত্রাসী অবকাঠামোতে” ব্যবহারের জন্য রাখা হয়েছিল।
অভিযানের বিষয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে, ইসরায়েলি গণমাধ্যমে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাদের ধারণা এই বিনিময় কেন্দ্রগুলো সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর অর্থ সরবরাহ করছে।
ওই কর্মকর্তা কোনো প্রমাণ পেশ করেননি, বরং তাদের “ধারণা”-র কথা উল্লেখ করেছেন।
হামাসের পক্ষ থেকে ইসরায়েলি এই অভিযানের তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। তারা বলেছে, এটি ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে, তাদের জীবন ও অর্থনীতির বিরুদ্ধে একটি “প্রকাশ্য যুদ্ধ”।
হামাস আরও বলেছে, এই ধরনের হামলা ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করার উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে। হামাস ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রতি ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
অন্যদিকে, ফিলিস্তিনের মুজাহিদিন মুভমেন্ট বলেছে, এই অভিযান তাদের জনগণের বিরুদ্ধে একটি “খোলা যুদ্ধ” এবং এর মাধ্যমে তাদের “অস্তিত্বের” ওপর আঘাত হানা হচ্ছে। সংগঠনটি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে এই ধরনের হামলার বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের রক্ষা করতে এবং ইসরায়েলের সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযান চলছে। এতে এ পর্যন্ত ৫০,০০০ এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা