যুদ্ধবিরতির দাবিতে ফুঁসছে ইসরায়েলি সেনা! রিজার্ভ সেনাদের প্রতিবাদে তোলপাড়

গাজায় যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মধ্যে বাড়ছে অসন্তোষ। দেশটির এলিট গোয়েন্দা ইউনিটের রিজার্ভ সেনারা অবিলম্বে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন, এমনকি এর জন্য যুদ্ধ বন্ধ করতে হলেও যেন তা করা হয়।

সম্প্রতি প্রকাশিত এক চিঠিতে এই দাবি জানানো হয়েছে, যেখানে যুদ্ধের তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে এবং একে রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষার হাতিয়ার হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

জানা গেছে, এলিট ইউনিট ৮২০০-এর প্রায় ২৫০ জনের বেশি রিজার্ভ সেনা ও অবসরপ্রাপ্ত সদস্য এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। তাঁদের মতে, বর্তমান যুদ্ধ নিরাপত্তা স্বার্থের পরিবর্তে রাজনৈতিক এবং ব্যক্তিগত স্বার্থ বেশি রক্ষা করছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, যুদ্ধ চললে জিম্মি, সেনা সদস্য এবং সাধারণ মানুষের মৃত্যু ঘটবে। তাঁরা প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সমালোচনা করে বলেছেন, হামাসকে পরাজিত করা এবং গাজায় আটক ৫৯ জন জিম্মিকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে তাঁর কোনো সুস্পষ্ট পরিকল্পনা নেই।

এই ঘটনার একদিন আগে, ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর শত শত অবসরপ্রাপ্ত ও রিজার্ভ সেনা একটি অনুরূপ চিঠি প্রকাশ করেন, যেখানে যুদ্ধের কারণ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীতে সাধারণত কম সংখ্যক নিয়মিত সেনা থাকে, তবে দীর্ঘমেয়াদী সংঘাতের জন্য রিজার্ভ ফোর্সের ওপর তারা ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।

রিজার্ভ সেনাদের মধ্যে এই অসন্তোষ দেখা দিলে গাজায় সামরিক অভিযান চালানো কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।

তবে, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এই প্রতিবাদকে ছোট একটি গোষ্ঠীর কাজ হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং এর পেছনে বিদেশি অর্থায়নের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি এটিকে নস্যাৎ করার চেষ্টা করলেও, তাঁর বক্তব্যে সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন অংশ থেকে আসা প্রতিবাদের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, ইসরায়েলের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ জিম্মিদের মুক্তির জন্য যুদ্ধ বন্ধের পক্ষে।

সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলি বিমান বাহিনী জানিয়েছে, এই প্রতিবাদে জড়িত সেনাদের বরখাস্ত করা হয়েছে এবং আরও কতজন এখনো সামরিক বাহিনীতে আছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর কমান্ডার মেজর জেনারেল টোমার বার এক বিবৃতিতে এই ধরনের প্রতিবাদকে যুদ্ধের সময়ে অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *