জেরুজালেম দিবস উপলক্ষে বিতর্কিত এক শোভাযাত্রায় ইসরায়েলি চরমপন্থীদের আগ্রাসন দেখা গেছে। সোমবার (১১ই মে) পুরাতন জেরুজালেমের মুসলিম কোয়ার্টারের ভেতর দিয়ে এই শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা ফিলিস্তিনিদের প্রতি বিদ্বেষমূলক শ্লোগান দেয় এবং তাদের দোকান ও সম্পত্তির উপর হামলা চালায়।
আল-আকসা মসজিদ চত্বরেও তারা প্রবেশ করে, যা মুসলিমদের কাছে পবিত্র স্থান হিসেবে পরিচিত। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরওয়া-এর একটি কম্পাউন্ডেও তারা ঢুকে পড়ে।
প্রতি বছর জেরুজালেম দিবস পালন করা হয়, যা ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর পূর্ব জেরুজালেম দখলের স্মরণে অনুষ্ঠিত হয়। এই উপলক্ষে আয়োজিত র্যালিতে প্রায়ই ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ইসরায়েলি চরমপন্থীদের সংঘর্ষ হয়।
এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ‘আরবদের মৃত্যু হোক’ এবং ‘তোমাদের গ্রাম জ্বলে যাক’ – এমন শ্লোগান দিতে দিতে মিছিলকারীরা মুসলিম এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জেরুজালেম ওয়াকফ, যারা আল-আকসা মসজিদের তত্ত্বাবধান করে। তারা এই ধরনের উস্কানিমূলক কার্যক্রম বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।
মুসলিমদের জন্য পবিত্র এই স্থানে শুধুমাত্র মুসলিমদের প্রার্থনা করার অনুমতি রয়েছে।
আল-আকসা মসজিদ চত্বরে ইসরায়েলি নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এবং অন্যান্য রাজনীতিবিদদের উপস্থিতিও দেখা গেছে।
বেন-গভির তার এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে একটি ভিডিও পোস্ট করে জানান, তিনি যুদ্ধে জয় ও জিম্মিদের মুক্তির জন্য প্রার্থনা করেছেন।
জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরওয়া-এর কর্মীদের কাজেও বাধা দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ইউএনআরওয়া-কে ফিলিস্তিনি অঞ্চলে কাজ করতে দিতে রাজি নয় ইসরায়েল।
সংস্থাটি জানিয়েছে, ইসরায়েলি আইনপ্রণেতা ইউলিয়া মালিনোভস্কি সহ প্রায় এক ডজন ইসরায়েলি বিক্ষোভকারী তাদের কম্পাউন্ডে প্রবেশ করে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের ঘটনাগুলো উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তোলে এবং ভবিষ্যতে বৃহত্তর সংঘাতের কারণ হতে পারে। আল জাজিরার সাংবাদিক নিদা ইব্রাহিম জানিয়েছেন, এই মিছিলের উদ্দেশ্য ছিল জেরুজালেমের উপর ইসরায়েলের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা