গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আবারও বহু মানুষের মৃত্যু, বাড়ছে সংঘাত।
ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বজুড়ে আলোচনার বিষয়। এই অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য আন্তর্জাতিক মহল চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু সহিংসতার মাত্রা কিছুতেই কমছে না।
সম্প্রতি গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ৬ জন শিশুও রয়েছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রবিবার (গতকাল) এই হামলা চালানো হয়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই যুদ্ধের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৫৮,০০০ এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা অর্ধেকের বেশি। গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধাদের হামলায় প্রায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছিল এবং ২৫১ জনকে অপহরণ করা হয়। এরপর থেকেই গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান চলছে।
সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবর অনুযায়ী, গাজার নুসেইরাতের একটি জল সংগ্রহের স্থানে হামলা চালানো হয়, যেখানে শিশুদেরও মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঘটনার সময় সেখানে প্রায় ২০ জন শিশু ও ১৪ জন প্রাপ্তবয়স্ক জল ভরতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। হামলায় আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা একজন জঙ্গিকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল, তবে কারিগরি ত্রুটির কারণে ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্য থেকে ‘কয়েক ডজন মিটার’ দূরে গিয়ে পড়ে। তারা এই ঘটনার তদন্ত করছে বলেও জানিয়েছে।
অন্যদিকে, গাজার জাওয়ািদায় একটি বাড়িতে ইসরায়েলি হামলায় ২ জন নারী ও ৩ জন শিশুসহ ৯ জন নিহত হয়েছে। আল-আকসা শহীদ হাসপাতালের পক্ষ থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধ বন্ধের জন্য মধ্যস্থতাকারীরা চেষ্টা চালাচ্ছেন, কিন্তু ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সমঝোতা এখনো হয়নি। জানা গেছে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। তবে যুদ্ধবিরতির সময় ইসরায়েলি সেনা মোতায়েন নিয়ে নতুন করে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। হামাস জানিয়েছে, তারা অবশিষ্ট ৫০ জন জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি, তবে এর বিনিময়ে তারা চায় যুদ্ধ বন্ধ এবং ইসরায়েলি বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার।
পশ্চিম তীরেও সহিংসতা বাড়ছে, যেখানে ইসরায়েলি সেনা ও বসতি স্থাপনকারীদের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষ হচ্ছে। সেখানকার আল-মাযরাহ্ শারকিয়ায় ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় নিহত হয়েছেন ফিলিস্তিনি-মার্কিন নাগরিক সাইফোল্লাহ মুসালেট। তাঁর বন্ধুকেও গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। নিহত সাইফোল্লাহ ফ্লোরিডার বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর পরিবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকে ঘটনার তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস