গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত, বাড়ছে মানবিক সংকট।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় আবারও নিহত হয়েছে বহু ফিলিস্তিনি। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়) দেইর আল-বালাহ্ ও গাজা শহরের বিভিন্ন স্থানে এই হামলা চালানো হয়।
স্থানীয় সূত্র থেকে জানা গেছে, দেইর আল-বালাহ্ অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ট্যাংক থেকে গোলাবর্ষণ করা হয়, যা আগে যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে তুলনামূলকভাবে রক্ষা পেয়েছিল। সেখানকার বাসিন্দারা জানান, অবিরাম বোমা হামলায় এলাকাটি কেঁপে ওঠে।
গাজা শহরের শাতি শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া উদ্বাস্তুদের তাঁবুতে আঘাত হানে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র। এতে নারী ও শিশুসহ অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছে। গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতাল সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আবু সলমিয়া জানান, হামলায় নিহতদের মধ্যে তিনজন নারী ও তিনজন শিশু রয়েছে। আহত হয়েছে আরও ৩৮ জন।
অন্যদিকে, গাজা শহরে ত্রাণ বিতরণের জন্য অপেক্ষারত ফিলিস্তিনিদের ওপর রাতে বোমা হামলা চালানো হয়। এতে কমপক্ষে আটজন নিহত এবং ১১৮ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। ফিলিস্তিনের রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে হতাহতের এই সংখ্যা।
বর্তমানে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে উভয়পক্ষের মধ্যে মতানৈক্যের কারণে আলোচনা এখনো কোনো সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি।
এদিকে, ইসরায়েলের ক্রমাগত হামলায় গাজায় মানবিক সংকট আরও বাড়ছে। ত্রাণ বিতরণেও দেখা যাচ্ছে চরম বিশৃঙ্খলা। জাতিসংঘের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গাজায় ত্রাণ সংগ্রহের সময় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা পরিদর্শনে আসা শীর্ষস্থানীয় খ্রিস্টান ধর্মগুরুরা অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। জেরুজালেমে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা গাজার ভয়াবহ পরিস্থিতি তুলে ধরেন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে মানবিক সহায়তা চেয়েছেন।
গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর থেকে সেখানকার একটি ক্যাথলিক চার্চ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে তিনজন নিহত এবং ১০ জন আহত হয়। পোপ ফ্রান্সিসসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহল এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে।
গাজায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৯ হাজারের বেশি। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা অর্ধেকের বেশি বলে জানা গেছে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস