যুদ্ধবিধ্বস্ত ইসরায়েল থেকে পালাতে সাইপ্রাসে আশ্রয়, খাবার পেলেন আটকে পড়া ইসরায়েলিরা

ভূমধ্যসাগরে অবস্থিত দ্বীপ রাষ্ট্র সাইপ্রাসে আটকা পড়েছেন প্রায় সাড়ে ছয় হাজার ইসরায়েলি নাগরিক। তাদের মধ্যে অনেকেই ইসরায়েলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার সময় বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় সেখানে আটকা পড়েন।

ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার কারণে বিমান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। খবর সূত্রে জানা যায়, আটকে পড়া এই মানুষগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছেন স্থানীয় রাব্বি ও অন্যান্যরা।

আটকে পড়া যাত্রীদের মধ্যে একজন ইয়োসি লেভিটান। তিনি সাইপ্রাসে তার ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি এখনো সেখানে আটকা।

লেভিটানের ভাষ্যমতে, তিনি আগামী সপ্তাহে দেশে ফেরার জন্য টিকিট পেয়েছেন। ইসরায়েলের তেল আবিবের কাছাকাছি রামলায় তার আট সন্তান ও এক নাতি-নাতনি রয়েছে। তাদের কাছে ফিরতে পারাটাই এখন তার একমাত্র চাওয়া।

জানা গেছে, গত ১২ই জুন তারিখে অন্তত ১০টি ইসরায়েলগামী বিমানকে সাইপ্রাসের লারনাকা বিমানবন্দরে অবতরণ করতে বাধ্য করা হয়। এরপর থেকে আরও হাজার হাজার মানুষ আকাশপথে কিংবা সমুদ্রপথে ইসরায়েলে ফেরার আশায় সাইপ্রাসে এসে ভিড় করছেন।

তাদের জন্য স্থানীয় রাব্বি আরিয়ে জিভ রাসকিন-এর নেতৃত্বে এগিয়ে এসেছেন ১৪ জন রাব্বি। এই বিপুল সংখ্যক মানুষের জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা ছিল একটি বড় চ্যালেঞ্জ। স্থানীয় চাবাদ সেন্টারে তাদের জন্য কোশার খাবার প্রস্তুত করা হচ্ছে। কোশার খাবার হলো, ইহুদিদের ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী প্রস্তুত করা খাবার।

রাব্বি আরিয়ে জিভ রাসকিন জানান, হাঙ্গেরি, ইতালি, জর্জিয়া এবং নিউ ইয়র্ক থেকেও অনেকে সাইপ্রাসে এসে আটকা পড়েছেন। লারনাকা ও পাফোস শহর দুটি ইসরায়েলের কাছাকাছি হওয়ায়, মানুষজন এখানে এসে অপেক্ষা করছেন, যেন বিমান চলাচল শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তারা ইসরায়েলে ফিরতে পারেন।

তিনি আরও জানান, স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের আশ্রয় দিয়েছেন এবং অসুস্থদের চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে যাদের ইসরায়েলে ফেরা প্রয়োজন, তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে বয়স্ক ব্যক্তি, একা মা ও অসুস্থ শিশুদের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা নার্সদের বিষয়টি বিশেষভাবে দেখা হচ্ছে।

পরিস্থিতি বিবেচনা করে রাব্বি রাসকিন এখন আর বেশি মানুষকে সাইপ্রাসে এসে অপেক্ষা করতে নিরুৎসাহিত করছেন। তিনি বলেন, “বর্তমানে সাইপ্রাসে তাদের থাকার মতো যথেষ্ট জায়গা নেই। তাই, যারা অন্য কোনো দেশে নিরাপদে আছেন, তাদের সেখানেই থাকা উচিত। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে, তাদের স্বাগত জানানো হবে।”

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *