ট্রাম্পের শুল্ক: ইতালির প্রধানমন্ত্রীর সতর্কবার্তা!

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্ভাব্য বাণিজ্য যুদ্ধ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি। তিনি এই সংকট মোকাবিলায় “যুক্তিসঙ্গত” পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন এবং ট্রান্সআটলান্টিক ঐক্য বজায় রাখার উপর জোর দিয়েছেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইইউ থেকে আমদানিকৃত পণ্যের উপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা করার পর এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আগামী সপ্তাহ থেকে গাড়ি আমদানিতে ২৫ শতাংশ এবং শ্যাম্পেন, ওয়াইন ও অন্যান্য অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়ের উপর ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত। এই পদক্ষেপের ফলে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়ছে।

ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি মনে করেন, শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়ে মতপার্থক্য থাকলেও, তাড়াহুড়ো করে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত হবে না। তার মতে, এর পরিবর্তে একটি যুক্তিযুক্ত ও সুচিন্তিত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। ইতালীয় ব্যবসার একটি বড় অংশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়।

দেশটির শিল্প ফেডারেশন কনফিন্ডাষ্ট্রিয়ার প্রধান ইমানুয়েল ওরসিনি সতর্ক করে বলেছেন, বাণিজ্য যুদ্ধ ইতালির জন্য একটি “বিরাট সমস্যা” তৈরি করবে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, ইইউ আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধান খুঁজে বের করতে পারবে।

মেলোনি, যিনি রাজনৈতিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিষয়ে কিছুটা সন্দিহান, তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ইতালির “প্রথম মিত্র” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। একইসঙ্গে, তিনি ইউরোপ ও আমেরিকার মধ্যে যেকোনো একটিকে বেছে নেওয়ার ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

সম্প্রতি, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভেন্সের এই অভিযোগের সঙ্গে তিনি একমত পোষণ করেছেন যে, ইউরোপ মুক্ত চিন্তা ও গণতন্ত্রের প্রতি তাদের অঙ্গীকার থেকে সরে আসছে।

অন্যদিকে, বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা এলি স্ক্লেইন মনে করেন, মেলোনির সরকার ট্রাম্প প্রশাসনের “ট্রোজান হর্স”-এ পরিণত হচ্ছে। এই বিষয়ে ইতালির রাজনৈতিক অঙ্গনে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে।

তবে, ইউরোপের প্রতিরক্ষা জোরদার করার পরিকল্পনার প্রতি মেলোনি সমর্থন জানিয়েছেন। কিন্তু তার জোট সরকারের একজন অংশীদার, অভিবাসন বিরোধী লিগ পার্টির নেতা মাত্তেও সালভিনি, এই প্রতিরক্ষা পরিকল্পনার বিরোধিতা করছেন।

সালভিনির মতে, এটি জার্মানির অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার একটি কৌশল মাত্র।

আন্তর্জাতিক বাজারে এই ধরনের বাণিজ্য যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর উপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

বাংলাদেশের মতো দেশগুলিও এর থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *