বন্ধুদের আইভিএফ নিয়ে কথা: যা বলা উচিত, আর যা নয়!

বাংলাদেশের অনেক দম্পতির কাছে সন্তান জন্ম দেওয়া একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে, সন্তান ধারণ করা কঠিন হয়ে ওঠে।

চিকিৎসা বিজ্ঞান আমাদের জন্য ‘ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন’ বা আইভিএফ-এর মতো সুযোগ নিয়ে এসেছে, যা বন্ধ্যাত্ব দূরীকরণে সাহায্য করে। আইভিএফ (IVF) একটি বিশেষ প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে পরীক্ষাগারে ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর মিলন ঘটিয়ে ভ্রূণ তৈরি করা হয়, এবং পরে তা নারীর জরায়ুতে প্রতিস্থাপন করা হয়।

এই বিষয়টি নিয়ে অনেকের মনেই অনেক প্রশ্ন থাকে, বিশেষ করে যারা এই চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন, তাদের প্রতি আমাদের কেমন আচরণ করা উচিত, সে বিষয়ে অনেকেই দ্বিধায় ভোগেন।

আসুন, আজ আমরা সেই বিষয়ে কিছু প্রয়োজনীয় কথা জেনে নিই।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে, বর্তমানে আইভিএফ চিকিৎসা বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। তবে, এই পথটি অনেকের জন্য সহজ নয়।

আমাদের সমাজে, বন্ধ্যাত্ব এখনও একটি সংবেদনশীল বিষয়। অনেক দম্পতিকে এর কারণে মানসিক ও সামাজিক চাপের সম্মুখীন হতে হয়।

তাই, যারা এই চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন, তাদের প্রতি সহানুভূতি ও সমর্থন জানানো খুবই জরুরি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন মানুষের বন্ধু বা পরিচিত কেউ যখন আইভিএফ-এর মতো একটি কঠিন চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যান, তখন কিছু কথা বলা বাঞ্ছনীয় নয়।

  • “আর কোনো উপায় নেই? শুধু এটাই?” – এই ধরনের প্রশ্ন করাটা তাদের মানসিক কষ্টের কারণ হতে পারে।
  • “আগে কেন করেননি?” – এই ধরনের প্রশ্ন তাদের অতীতের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিব্রত করতে পারে।
  • “ছেলেরা তো এমনিতেই ভালো থাকে!” – এই কথাটি তাদের হতাশ করতে পারে।
  • “আগে কেন করেননি?” – এই ধরনের প্রশ্ন তাদের অতীতের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিব্রত করতে পারে।

বরং, তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া এবং তাদের পাশে থাকার বার্তা দেওয়া উচিত। আপনি তাদের বলতে পারেন:

  • “আমি দুঃখিত যে তোমাকে এই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে।
  • “আমি সবসময় তোমার পাশে আছি, যদি কোনো সাহায্যের প্রয়োজন হয়।
  • “আমি জানি এটা সহজ নয়, তবে তুমি একা নও।
  • “যা কিছু প্রয়োজন, আমাকে জানিও।

চিকিৎসা বিজ্ঞান জানাচ্ছে, আইভিএফ-এর সাফল্যের হার সব সময় একই রকম থাকে না। সাধারণত, ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের পর সফলতার হার ৩০-৩৫ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।

বাংলাদেশেও এখন আইভিএফ-এর চাহিদা বাড়ছে, তবে এটি বেশ ব্যয়বহুল একটি চিকিৎসা পদ্ধতি। একটি আইভিএফ চক্রের খরচ কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে, যা অনেক দম্পতির জন্য বেশ কঠিন।

আমাদের মনে রাখতে হবে, বন্ধ্যাত্বের শিকার হওয়া দম্পতিদের প্রতি সহানুভূতি ও সমর্থন জানানো আমাদের সামাজিক দায়িত্ব। তাদের মানসিক শান্তির জন্য প্রয়োজন আমাদের সহযোগিতা।

তাদের পাশে থাকুন, তাদের কথা শুনুন, এবং তাদের প্রতি সংবেদনশীল হোন।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *