টেনিস বিশ্বে এক নতুন তারকার উত্থান, যিনি বড় খেতাব জয়ের স্বপ্ন দেখছেন – ব্রিটেনের জ্যাক ড্র্যাপার। সম্প্রতি, ক্যালিফোর্নিয়ার ইন্ডিয়ান ওয়েলসে মাস্টার্স ১০০০ খেতাব জিতে নিজের জাত চিনিয়েছেন ২৩ বছর বয়সী এই খেলোয়াড়।
এটি তার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা সাফল্য। এই জয়ের ফলে এটিপি র্যাঙ্কিংয়ে তিনি সপ্তম স্থানে উঠে এসেছেন, যা তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দেয়।
ড্র্যাপারের এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে কঠোর পরিশ্রম আর দৃঢ় মানসিকতা। ইন্ডিয়ান ওয়েলসের ফাইনালে আসার পথে তিনি শীর্ষ ১৫ র্যাঙ্কিংয়ের চার জন খেলোয়াড়কে পরাজিত করেছেন।
সেমিফাইনালে কার্লোস আলকারাজকে হারানোটা ছিল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই জয় প্রমাণ করে, ড্র্যাপার শুধু সম্ভাবনাময় নন, বরং শীর্ষ পর্যায়ে খেলার জন্য প্রস্তুত।
ড্র্যাপার প্রায়ই ইনজুরির শিকার হয়েছেন, যা তার ক্যারিয়ারের অগ্রযাত্রায় বাধা সৃষ্টি করেছে। গত ডিসেম্বরে হিপের টেনডোনাইটিস (tendinitis) সমস্যার কারণে তাকে মাঠের বাইরে থাকতে হয়।
এমনকি অস্ট্রেলিয়ান ওপেনেও তিনি সম্পূর্ণ ফিট ছিলেন না, তবুও দারুণ লড়াই করে চতুর্থ রাউন্ড পর্যন্ত গিয়েছিলেন। এই সময়ে আলকারাজের বিপক্ষে খেলায় তিনি আহত হয়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন।
তবে ইনজুরি তার মনোবলকে দুর্বল করতে পারেনি। বরং প্রতিটি আঘাত থেকে শিক্ষা নিয়ে তিনি আরও শক্তিশালী হয়েছেন। ড্র্যাপার বলেন, “আমি এখন আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী যে শীর্ষ খেলোয়াড়দের সঙ্গে নিয়মিতভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারব।
গ্র্যান্ড স্লাম টুর্নামেন্টে পাঁচ সেট খেলার বিষয়টি কিছুটা ভিন্ন, তবে আমি মনে করি আমি এখানে টিকে থাকতে পারব।
জ্যাক ড্র্যাপারের খেলার ধরন তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে। তার শক্তিশালী বাম-হাতি সার্ভ (serve) এবং রিটার্ন করার অসাধারণ ক্ষমতা তাকে প্রতিপক্ষের জন্য কঠিন করে তোলে।
এছাড়াও, তার রক্ষণভাগ অত্যন্ত শক্তিশালী। নেট-এর কাছে তিনি স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে পারেন এবং ড্রপ শটের (drop shot) মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে বিভ্রান্ত করতেও পারদর্শী।
ড্র্যাপারের কোচ জেমস ট্রটম্যান এবং ফিজিও শেন আনুন ও স্ট্রেন্থ ও কন্ডিশনিং কোচ ম্যাট লিটলসহ একটি শক্তিশালী সাপোর্ট টিম রয়েছে। খেলোয়াড় হিসেবে সঠিক পরিকল্পনা ও উপযুক্ত সহযোগী নির্বাচন তার সাফল্যের গুরুত্বপূর্ণ দিক।
ড্র্যাপারের এই উত্থান শুধু তার ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং বিশ্ব টেনিসের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। তার এই জয় প্রমাণ করে, কঠোর অধ্যবসায় ও আত্মবিশ্বাসের মাধ্যমে যেকোনো বাধা জয় করা সম্ভব।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান