কারাবন্দী ইমামোগ্লু: তুরস্কের নির্বাচনে বাজিমাত!

ইস্তাম্বুলের মেয়র, এরদোয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বী, কারাগারে থেকেই পেলেন মনোনয়ন

তুরস্কে বিরোধী রাজনৈতিক দল সিএইচপি’র রাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ইস্তাম্বুলের মেয়র একরাম ইমামoglu। বর্তমানে তিনি কারাগারে বন্দী রয়েছেন। দলটির প্রাথমিক নির্বাচনে প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষ ভোট দিয়েছেন, যা ইমামoglu-র প্রতি জনগণের ব্যাপক সমর্থনের ইঙ্গিত দেয়।

মেয়র ইমামoglu-কে দুর্নীতির অভিযোগে গত সপ্তাহে আটক করা হয়, এরপর তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে জেলে পাঠানো হয়। এই ঘটনার পরেই দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরিচিত ইমামoglu-কে নির্বাচনের অযোগ্য করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

বিরোধী দল সিএইচপি’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দলের সদস্য এবং সমর্থনকারীদের ভোটে ইমামoglu ১৪ মিলিয়নের বেশি ভোট পেয়েছেন। তারা মনে করেন, এই ফলাফলের মাধ্যমে এরদোয়ানের বৈধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে এবং দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

অন্যদিকে, এরদোয়ান সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইমামoglu-র গ্রেপ্তারের পেছনে রাজনৈতিক কোনো উদ্দেশ্য নেই এবং তুরস্কের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করে। তবে, বিক্ষোভকারীদের দমন করতে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এবং বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করা হয়েছে।

ইমামoglu-কে মারমারা কারাগারে রাখা হয়েছে। তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং দেশব্যাপী আরো বিক্ষোভের আহ্বান জানিয়েছেন। কারাগারে থেকেই তিনি বলেছেন, এত বিপুল সংখ্যক মানুষের ভোটে অংশগ্রহণে তিনি অত্যন্ত আনন্দিত।

সরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইছে। এরই মধ্যে, কয়েকশ’ সামাজিক মাধ্যম একাউন্ট বন্ধ করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে, এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে টুইটার (X) কর্তৃপক্ষ।

বিক্ষোভের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে। এছাড়া, বেশ কয়েকজন সাংবাদিককেও আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

বর্তমানে, তুরস্কের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বিরাজ করছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতি অদূর ভবিষ্যতে দেশটির রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *