সাবেক এফবিআই প্রধান জেমস কোমির সামাজিক মাধ্যমের কার্যকলাপ আবারও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সম্প্রতি তাঁর একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্ট ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে সমুদ্রের ঝিনুক দিয়ে ’86 47′ সংখ্যা দুটি তৈরি করা হয়েছিল।
এই পোস্টটিকে অনেকে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ক্ষমতা থেকে সরানোর ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন। এই ঘটনা সাবেক এই এফবিআই প্রধানের বিতর্কিত সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারের দীর্ঘ তালিকার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)-এর সাবেক পরিচালক জেমস কোমির এই ধরনের কার্যকলাপ আগে বহুবার সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে তাঁর বিরোধ দীর্ঘদিনের।
কোমিকে বরখাস্ত করার পর থেকে তিনি বিভিন্ন সময়ে ট্রাম্প এবং তাঁর সমর্থকদলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। এমনকি, তিনি ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থীদেরও সমর্থন করেছেন।
২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেন এবং কমলা হ্যারিসকে সমর্থন করে কোমি তাঁর সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন। সম্প্রতি, ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে কমলা হ্যারিসের সমর্থনে একাধিক বার্তা দিয়েছেন তিনি।
তাঁর এই ধরনের রাজনৈতিক মন্তব্য অনেক সময় সমালোচনার কারণ হয়েছে।
কোমির আগের করা একটি পোস্টে দেখা যায়, তিনি সমুদ্র তীরে ঝিনুক দিয়ে ’86 47′ সংখ্যা দুটি তৈরি করেছেন। এই পোস্টের পরেই ট্রাম্প এবং তাঁর সমর্থকরা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান।
এই সংখ্যা দুটিকে ট্রাম্পকে ক্ষমতা থেকে সরানোর ইঙ্গিত হিসেবে অনেকে মনে করেন। এই ঘটনার জেরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগ এবং সিক্রেট সার্ভিস কোমির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা যায়।
এই ঘটনার পরে, ট্রাম্প এক সাক্ষাৎকারে কোমির বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ করে বলেন, “তিনি (কোমি) ঠিক কী বুঝিয়েছেন, তা সবাই জানে। এমনকি একটি শিশুও জানে এর মানে কী।
যদি আপনি এফবিআই পরিচালক হয়ে এর মানে না জানেন? তার মানে হলো, এটি সরাসরি হত্যার ইঙ্গিত।”
যদিও কোমি তাঁর পোস্টটি সরিয়ে নিয়েছেন এবং বলেছেন, “আমি বুঝতে পারিনি যে কিছু লোক এই সংখ্যাগুলোকে সহিংসতার সঙ্গে যুক্ত করে।
আমার এমনটা মনে হয়নি, তবে আমি সব ধরনের সহিংসতার বিরোধী, তাই আমি পোস্টটি সরিয়ে নিয়েছি।”
কোমির সামাজিক মাধ্যমের বিতর্কিত ব্যবহারের একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। ২০১৬ সালের নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটনের ইমেইল সংক্রান্ত তদন্ত পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্তের জন্য অনেকে কোমিকে দায়ী করেন।
এর পর থেকে তিনি বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক মন্তব্য করে সমালোচিত হয়েছেন। তাঁর এই ধরনের কার্যকলাপ অনেক সময় কৌতূহল এবং বিরক্তির সৃষ্টি করেছে।
কোমি তাঁর সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন সময়ে নিজের লেখা বইয়ের প্রচারও করেছেন। তাঁর লেখা একটি নতুন উপন্যাস প্রকাশের আগে তিনি সমুদ্র সৈকতে বসে সেই বই পড়ার ছবি পোস্ট করেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, কোমির এই ধরনের সামাজিক মাধ্যমের ব্যবহার তাঁর ভাবমূর্তির ক্ষতি করেছে। তবে, তাঁর সমর্থকরা মনে করেন, তিনি তাঁর মতামত প্রকাশ করার অধিকার রাখেন।
তথ্যসূত্র: সিএনএন