বিখ্যাত হলিউড অভিনেত্রী জেমি লি কার্টিস, যিনি তাঁর অভিনয় এবং সৌন্দর্যের জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তাঁর কর্মজীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে মুখ খুলেছেন।
অভিনয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন পণ্যের বিজ্ঞাপনে কাজ করার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি জানান, এর মূল কারণ ছিল তাঁর সন্তানদের জন্য সময় বের করা।
সাক্ষাৎকারে কার্টিস বলেন, “আমার কাছে পরিবার সবসময়ই সবার আগে। আমি চেয়েছিলাম আমার সন্তানদের ভালোভাবে দেখাশোনা করতে, তাদের পাশে থাকতে।
তাই যখন আমার ক্যারিয়ারের শীর্ষে ছিলাম, তখনও আমি এমন কিছু কাজ বেছে নিয়েছিলাম যা আমাকে বাড়িতে থাকতে সাহায্য করবে।” তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন অ্যাক্টিভিয়া ইয়োগার্ট, লেগস প্যান্টিহোজ এবং হার্টজ কার রেন্টালের মতো বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপনের কথা।
আসলে, নব্বইয়ের দশকে, যখন তাঁর সিনেমা ‘ট্রু লাইজ’ দারুণ ব্যবসা সফল হয়, তখন অনেকেই ভেবেছিলেন, তিনি হয়তো শুধুমাত্র সিনেমায় মন দেবেন।
কিন্তু সেই সময়ে তিনি বেছে নিয়েছিলেন বিজ্ঞাপন। এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কার্টিস বলেন, “আমি চেয়েছিলাম এমন কিছু করতে যা আমাকে আর্থিকভাবে স্থিতিশীল রাখবে এবং একই সঙ্গে পরিবারের সঙ্গে কাটানোর জন্য পর্যাপ্ত সময় দেবে।”
দুই সন্তানের মা, রুবি এবং অ্যানির মা হিসেবে, কর্মজীবনের এই পর্যায়ে আসাটা তাঁর জন্য সহজ ছিল না।
একজন অভিনেত্রী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করা এবং একই সঙ্গে সন্তানদের দেখাশোনা করার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা কঠিন ছিল।
তিনি বলেন, “আমি একজন অপূর্ণাঙ্গ মা, কারণ কোনো কর্মরত মা-ই আসলে নিখুঁত হতে পারে না। আমরা চেষ্টা করি, কিন্তু মাঝে মাঝে খারাপও লাগে।”
নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে কার্টিস আরও বলেন, “আমি জানি, সন্তানদের থেকে দূরে থেকে আমি আমার নিজের সৃজনশীলতার পেছনে কতটা সময় দিয়েছি।
কিন্তু এই বিজ্ঞাপনগুলো আমাকে সেই সুযোগ করে দিয়েছে, যা আমাকে আমার পরিবারের কাছাকাছি থাকতে সাহায্য করেছে।”
২০২৩ সালে ‘এভরিথিং এভরিহোয়ার অল অ্যাট ওয়ান্স’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য অস্কার জেতার পর, তিনি তাঁর স্বামী ক্রিস্টোফার গেস্ট এবং দুই মেয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, অভিনেত্রী হিসেবে সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছেও, তিনি তাঁর পরিবারের প্রতি কতটা যত্নশীল ছিলেন।
জেমি লি কার্টিসের এই বক্তব্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি কর্মজীবী মায়েদের জন্য একটি অনুপ্রেরণা।
কর্মজীবন এবং পরিবারের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে, তাঁর এই অভিজ্ঞতা অনেকের কাছে দৃষ্টান্তস্বরূপ।
তথ্য সূত্র: পিপল