জাপানে ভালুকের উপদ্রব: খাদ্য সংকটে লোকালয়ে হানা, মৃতের সংখ্যা অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়ে।
জাপানের উত্তরাঞ্চলে ভালুকের আক্রমণে মানুষের হতাহতের ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে। সম্প্রতি, দেশটির একটি সুপারমার্কেটে ঢুকে এক ভালুক দুইজন ক্রেতাকে আহত করেছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, রাজধানী টোকিও থেকে প্রায় ৮০ মাইল উত্তরে অবস্থিত নুমাটা শহরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই ঘটনা ঘটে। আহতদের বয়স ছিল ৬৯ ও ৭৬ বছর।
খবর অনুযায়ী, ১.৪ মিটার উচ্চতার একটি ভালুক দোকানের পার্কিং লট দিয়ে প্রবেশ করে এবং দোকানের ভেতরে থাকা লোকজনের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এই ঘটনায় আহত দুইজনকে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
জাপানে ভালুকের আক্রমণ নতুন নয়, তবে চলতি বছর পরিস্থিতি উদ্বেগজনক রূপ নিয়েছে। সরকারি তথ্য ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরে ভালুকের হামলায় মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যে ৭ জনে পৌঁছেছে, যা ২০০৬ সাল থেকে রেকর্ড করা তথ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভালুকেরা তাদের স্বাভাবিক আবাসস্থল থেকে খাদ্য সংগ্রহের জন্য লোকালয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছে। কারণ, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাদের খাদ্য সংগ্রহের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে।
এই ঘটনার কয়েক দিন আগে, উত্তর-পশ্চিমের আকিটা প্রিфекচারে এক কৃষকের উপর ভালুক হামলা চালায়। এছাড়াও, মধ্য জাপানের একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র শিরাকাওয়া গ্রামের কাছে এক স্প্যানিশ পর্যটকের উপরও ভালুকের আক্রমণের খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম এনএইচকে’র (NHK) একটি প্রতিবেদনে জানা যায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রায় ৪০ জন ক্রেতা ওই সুপারমার্কেটে কেনাকাটা করছিলেন। দোকান ব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, ভালুকটিকে দেখে মনে হচ্ছিল, সে সম্ভবত বের হতে পারছিল না বলেই অস্থির হয়ে উঠেছিল।
জুন মাসের শুরুতেও ভালুকের আক্রমণে দুজন নিহত হয়। এরপর ইওয়াতে প্রিфекচারে বুধবার সকালে ভালুকের আঁচড়ের চিহ্নযুক্ত একটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। সব মিলিয়ে, ভালুকের আক্রমণে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বন্যপ্রাণী এবং মানুষের মধ্যে এই ধরনের সংঘাতের মূল কারণ হলো জলবায়ু পরিবর্তন এবং মানুষের দ্বারা বনাঞ্চল ধ্বংসের ফলে বন্যপ্রাণীর খাদ্য ও আবাসস্থলের অভাব। এই পরিস্থিতিতে মানুষের সচেতনতা এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।
তথ্য সূত্র: সিএনএন