জাপানে বিতর্কিত ইউনিফিকেশন চার্চ বিলুপ্তির নির্দেশ দিয়েছে একটি আদালত। টোকিও জেলা আদালতের এই সিদ্ধান্ত আসে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের হত্যাকাণ্ডের তদন্তের পর।
জানা গেছে, এই চার্চের বিরুদ্ধে অনুদান সংগ্রহ ও সদস্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে প্রতারণার অভিযোগ ছিল।
আদালতের রায়ের ফলে, চার্চটি তাদের করমুক্ত সুবিধা হারাবে এবং তাদের সম্পত্তি বিক্রি করে দিতে হবে। তবে, এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ তাদের রয়েছে।
২০২২ সালে জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে হত্যার ঘটনার তদন্তে এই চার্চের সঙ্গে ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) দীর্ঘদিনের সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসে। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি, আবেকে হত্যার জন্য চার্চকে দায়ী করেছিলেন এবং তার পরিবারের আর্থিক কষ্টের কারণ হিসেবেও চিহ্নিত করেছিলেন।
জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০২৩ সালে এই চার্চকে বিলুপ্ত করার আবেদন জানিয়েছিল, কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল তাদের প্রতারণামূলক কার্যক্রম, যা অনুসারীদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করত এবং তাদের পরিবারগুলোর ক্ষতি করত।
ইউনিফিকেশন চার্চ, যা আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ফ্যামিলি ফেডারেশন ফর ওয়ার্ল্ড পিস অ্যান্ড ইউনিফিকেশন’ নামে পরিচিত, জাপানের ইতিহাসে প্রথম কোনো ধর্মীয় গোষ্ঠী, যাদের জাপানের দেওয়ানি আইনের অধীনে বিলুপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হলো।
এর আগে অবশ্য কয়েকটি ক্ষেত্রে ফৌজদারি অভিযোগের ভিত্তিতে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। যেমন, টোকিও মেট্রো স্টেশনে সারিন গ্যাস হামলা চালানো ‘আউম শিনরিকেও’ এবং প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত ‘মিয়োকাকুজি’ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।
উল্লেখ্য, জাপানে ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে ও যুদ্ধের সময় ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর নিপীড়নের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে, সরকার ধর্মীয় স্বাধীনতাকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন