জাপানে ইসরায়েলিদের যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক প্রশ্ন: গেস্ট হাউজের সিদ্ধান্তে তীব্র প্রতিক্রিয়া!

জাপানের কিয়োটোতে অবস্থিত একটি গেস্ট হাউসে আগত অতিথিদের যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে জড়িত না থাকার ঘোষণা দেওয়ার শর্ত জুড়ে দেওয়ায় বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ‘উইন্ড ভিলা’ নামের এই গেস্ট হাউসটির এমন পদক্ষেপে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত।

জানা গেছে, গত এপ্রিল মাসে এক ইসরায়েলি পর্যটককে একটি ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করতে বলা হয়, যেখানে উল্লেখ ছিল যে তিনি কোনো যুদ্ধাপরাধ করেননি। ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত গিলাদ কোহেন এই ঘটনাকে ইসরায়েলি নাগরিকদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তাঁর মতে, এই পদক্ষেপ “অগ্রহণযোগ্য” এবং এর মাধ্যমে ইসরায়েলিদের যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে এক কাতারে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।

কোহেন এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে কিয়োটো শহর কর্তৃপক্ষের কাছে এই ঘটনার দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানান। তিনি আরও উল্লেখ করেন, জাপান সবসময়ই আতিথেয়তা এবং শ্রদ্ধার মূল্যবোধের জন্য পরিচিত, এবং তিনি আশা করেন কর্তৃপক্ষ সকল পর্যটকদের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করবে।

অন্যদিকে, গেস্ট হাউসের মালিক অ্যাজ কিসি জানিয়েছেন, তিনি এই নীতি পরিবর্তনে আগ্রহী নন। তাঁর মতে, বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে, বিশেষ করে ইউক্রেন যুদ্ধ এবং গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রেক্ষাপটে, তিনি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। কিসি আরও জানান, এখন পর্যন্ত তিনজন ইসরায়েলি এবং একজন রাশিয়ান পর্যটক এই ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছেন।

ঘটনার শিকার হওয়া ইসরায়েলি পর্যটকের মতে, তিনি যেহেতু কোনো যুদ্ধাপরাধ করেননি, তাই স্বাক্ষর করতে তাঁর কোনো সমস্যা হয়নি। তিনি জানান, এতে সমস্যা সৃষ্টি হোক, এমনটা তিনি চাননি। যদিও শুরুতে তিনি কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন।

কিয়োটো শহর কর্তৃপক্ষ বিষয়টি খতিয়ে দেখেছে। তারা জানিয়েছে, গেস্ট হাউসের এই পদক্ষেপ জাপানের হোটেল আইনের লঙ্ঘন নয়, তবে এটিকে “অযৌক্তিক” হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

এদিকে, এই ঘটনার পর বুকিং ডটকম (Booking.com) উইন্ড ভিলার অ্যাকাউন্ট স্থগিত করেছে। যদিও ইসরায়েলি পর্যটক এই গেস্ট হাউসটি বুক করার জন্য অন্য একটি ওয়েবসাইট ব্যবহার করেছিলেন।

উল্লেখ্য, গত বছরও কিয়োটোর একটি হোটেলে ইসরায়েলি এক ব্যক্তিকে থাকার অনুমতি দিতে অস্বীকার করা হয়েছিল। পরে শহর কর্তৃপক্ষ ওই হোটেলকে সতর্ক করেছিল। জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ইয়োকো কামিকাওয়া এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেছিলেন, কোনো অতিথির জাতীয়তার কারণে থাকার অনুমতি দিতে অস্বীকার করা “অগ্রহণযোগ্য”।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *