ফুজি পর্বতের অগ্ন্যুৎপাত: জাপানে জরুরি নির্দেশিকা!

জাপানের বিখ্যাত ফুজি পর্বতমালায় সম্ভাব্য অগ্ন্যুৎপাতের কারণে সেখানকার বাসিন্দাদের জন্য জরুরি কিছু নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা গেছে।

জাপানের কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি এক নির্দেশনায় জানিয়েছে, রাজধানী টোকিওর কাছে অবস্থিত এই আগ্নেয়গিরিটিতে অগ্ন্যুৎপাত হলে জনগণের করণীয় কী হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে ভালো হয় বাড়িতে আশ্রয় নেওয়া এবং জরুরি ব্যবহারের জন্য দুই সপ্তাহের প্রয়োজনীয় জিনিস মজুত করা।

গত সপ্তাহে প্রকাশিত নির্দেশিকাগুলোতে এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যদিও এখনই ফুজি-তে অগ্ন্যুৎপাতের কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না, তবে এটি একটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি।

প্রায় ৩১৮ বছর আগে, ‘হোয়েই’ নামে পরিচিত একটি অগ্ন্যুৎপাতে এটি শেষবার বিস্ফোরিত হয়েছিল। টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তোশিতসুগু ফুজি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমরা প্রায় ৩০০ বছর আগের ‘হোয়েই’ অগ্ন্যুৎপাতের মতো বড় ধরনের বিস্ফোরক অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা বিবেচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা করছি।

এমনটা ঘটলে রাজধানী অঞ্চলসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় ব্যাপক ছাইfall হতে পারে, যা মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।

সরকার জানিয়েছে, বড় ধরনের অগ্ন্যুৎপাত হলে প্রায় ১.৭ বিলিয়ন ঘনমিটার (60 বিলিয়ন ঘনফুট) ছাই তৈরি হতে পারে। এর মধ্যে প্রায় ৪৯০ মিলিয়ন ঘনমিটার ছাই রাস্তাঘাট, ভবন এবং অন্যান্য স্থানে জমা হবে, যা অপসারণ করতে হবে।

নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে আকাশ কালো ছাইয়ে ঢেকে যাবে এবং দিনের বেলাতেও শহরগুলোতে নেমে আসবে গভীর অন্ধকার।

অধ্যাপক ফুজি আরও বলেন, “ব্যাপক ছাই পড়লে বাসিন্দাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বাড়িতে বা অন্য কোনো আশ্রয়কেন্দ্রে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চালিয়ে যাওয়া। তাই নিয়মিতভাবে পর্যাপ্ত পরিমাণে জরুরি জিনিস মজুত রাখা অপরিহার্য।

তিনি যোগ করেন, “তবে, যদি ৩০ সেন্টিমিটারের বেশি ছাই জমে, তাহলে দুর্বল কাঠামোর বাড়িঘর ধসে পড়তে পারে, সেক্ষেত্রে দ্রুত স্থানান্তরের প্রয়োজন হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ফুজি-র অগ্ন্যুৎপাতে প্রায় ২.৫ ট্রিলিয়ন ইয়েন (১৬.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) পর্যন্ত অর্থনৈতিক ক্ষতি হতে পারে। এমনকি সামান্য পরিমাণ ছাই জমলেও ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে ৩ সেন্টিমিটারের বেশি গভীরতায় ছাই জমলে যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়বে রাস্তা। এছাড়াও, জরুরি পণ্য সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হবে এবং বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গিয়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হতে পারে।

বাংলাদেশের মানুষজন যেমন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় জরুরি প্রস্তুতি নেয়, তেমনি জাপানের মানুষজনও ফুজি-র অগ্ন্যুৎপাতের মতো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *