জাপান-আমেরিকা বাণিজ্য চুক্তি: বিলম্ব হওয়ায় ক্ষুব্ধ টোকিও!

জাপান-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য চুক্তি : বাস্তবায়নে বিলম্ব, দ্রুত পদক্ষেপের আহ্বান

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক এক গুরুত্বপূর্ণ খবরে জানা গেছে, জাপান সরকার তাদের বাণিজ্য বিষয়ক বিশেষ দূতকে ওয়াশিংটনে পাঠাবার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে।

এর কারণ হিসেবে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র-জাপান বাণিজ্য চুক্তির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে দু’দেশের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি হয়েছে।

জাপান চাইছে, এই চুক্তির বাস্তবায়ন দ্রুত হোক।

জাপানের প্রধান বাণিজ্য দূত রিওসেই আকাজাওয়ার বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন যাওয়ার কথা ছিল।

সেখানে তিনি এই চুক্তির বিষয়ে আলোচনার জন্য দশম বৈঠকে মিলিত হওয়ার কথা ছিল।

গত ২২শে জুলাই দু’দেশের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

কিন্তু জাপানের প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইয়োশিমাসা হায়াসি সাংবাদিকদের জানান, কিছু বিষয় নিয়ে এখনো বিস্তারিত আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে, যে কারণে এই সফর স্থগিত করা হয়েছে।

জানা যায় জুলাই মাসে দুই দেশ একটি চুক্তিতে পৌঁছেছিল, যেখানে জাপানি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি শুল্ক ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনার কথা ছিল।

শুরুতে এই শুল্কের হার ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছিল।

এই সিদ্ধান্তের ফলে জাপানি ব্যবসায়ীরা কিছুটা স্বস্তি অনুভব করছিলেন।

তবে, চুক্তির শর্তাবলী পর্যালোচনা করার সময় জাপানি কর্মকর্তারা জানতে পারেন যে, নতুন এই ১৫ শতাংশ শুল্ক বিদ্যমান অন্যান্য শুল্কের সঙ্গে যুক্ত হবে।

এতে তাদের উদ্বেগের কারণ হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারাও তাদের ভুল স্বীকার করে নেন এবং ১৫ শতাংশ শুল্ক বহাল রাখতে রাজি হন।

একই সঙ্গে অতিরিক্ত শুল্ক পরিশোধ করা হলে, তা ফেরত দেওয়ার ব্যাপারেও তারা সম্মত হন।

জাপান সরকার এখন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তাদের প্রতিশ্রুতি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য জোরালো আহ্বান জানাচ্ছে।

মন্ত্রী হায়াসি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

এই চুক্তির অংশ হিসেবে, জাপান আগামী বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

এই বিশাল অঙ্কের বিনিয়োগের কথা উল্লেখ করে বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি দু’দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে।

বিশ্লেষকদের মতে, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এই বাণিজ্য চুক্তি শুধু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং বিশ্ব অর্থনীতির প্রেক্ষাপটেও এর তাৎপর্য রয়েছে।

এই ধরনের বাণিজ্য চুক্তি এবং এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গতি প্রকৃতি নির্ধারণ করে।

উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য, বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো দেশের জন্য, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চুক্তি এবং শুল্কের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কারণ, বিশ্ব বাজারের সঙ্গে আমাদের অর্থনীতির সম্পর্ক এই ধরনের চুক্তির ওপর অনেকখানি নির্ভরশীল।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *