মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জাপানের ‘বিশাল অস্ত্র’! যা শুনলে চমকে উঠবেন!

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে, প্রতিপক্ষ দেশগুলো তাদের হাতে থাকা মার্কিন ঋণপত্র (ট্রেজারি বন্ড) ব্যবহার করতে পারে— এমন এক উদ্বেগের কথা শোনা যাচ্ছে। এর ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে।

বিশেষ করে, চীন ও জাপানের মতো দেশগুলো যদি এই পদক্ষেপ নেয়, তবে তা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বেশ কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।

জাপানের অর্থমন্ত্রী কাটসুনোবু কাটো সম্প্রতি জানান, বাণিজ্য আলোচনার টেবিলে যুক্তরাষ্ট্রের বন্ড বিক্রি করার বিষয়টি একটি ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

যদিও পরে তিনি তার এই মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, জাপান সরকার এখনই এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বিবেচনা করছে না। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ ব্যবস্থাপনার ওপর এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে আলোচনা চলছে।

আসলে, যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল ঋণের বোঝা রয়েছে, যা প্রায় ৩৬ ট্রিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি।

এই ঋণ পরিশোধের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অন্যান্য দেশের ওপর নির্ভর করতে হয়।

জাপান তাদের মধ্যে অন্যতম, যাদের কাছে প্রায় ১.১ ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন ট্রেজারি বন্ড রয়েছে।

চীনের হাতেও রয়েছে প্রায় ৭৮৪ বিলিয়ন ডলারের বন্ড। এছাড়া, যুক্তরাজ্যের কাছে রয়েছে ৭৫০ বিলিয়ন ডলারের মার্কিন বন্ড।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি কোনো দেশ একসঙ্গে বিপুল পরিমাণ মার্কিন বন্ড বিক্রি করে দেয়, তাহলে এর ফলস্বরূপ বন্ডের দাম কমে যাবে এবং সুদের হার বাড়বে।

এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ নেওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়বে।

এমনকি বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীরাও আতঙ্কিত হতে পারে, যা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য ভালো হবে না।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতি প্রায়ই বিভিন্ন দেশের সঙ্গে উত্তেজনা সৃষ্টি করে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে আমদানি শুল্ক বাড়ানো হয়, যার ফলস্বরূপ অনেক দেশ তাদের প্রতিক্রিয়া জানায়।

এর ফলে, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন এবং বিদেশি বিনিয়োগও কমে যেতে পারে।

এখন প্রশ্ন হলো, এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জন্য কী প্রভাব পড়তে পারে?

যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জাপানের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের আমদানি ও রপ্তানিতে প্রভাব পড়তে পারে।

কারণ, এই দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে।

মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হারে পরিবর্তন আসলে, তা বাণিজ্য খরচকে প্রভাবিত করতে পারে।

এছাড়া, বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা দেখা দিলে, বাংলাদেশের ঋণ গ্রহণের খরচও বাড়তে পারে।

অতএব, বিশ্ব অর্থনীতির এই জটিল পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের সতর্ক থাকতে হবে।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে, দেশের অর্থনীতির সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

বাণিজ্য সম্পর্ক স্থিতিশীল রাখতে এবং অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর কৌশল গ্রহণ করতে হবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *