জাপানে স্মার্টফোন ও মানচিত্র ছাড়া মোটরসাইকেলে দেশ ভ্রমণ!
বিশ্বজুড়ে গেমিং কমিউনিটিতে পরিচিত লুদভিগ আহরেন (Ludwig Ahgren), যিনি একজন জনপ্রিয় ইউটিউবার ও গেমার। সম্প্রতি তিনি বন্ধু মাইকেল রিভসকে সাথে নিয়ে এক ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন।
আধুনিক প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা ঝেড়ে ফেলে, তারা জাপানে মোটরসাইকেল নিয়ে ভ্রমণে বের হন—কোনো মানচিত্র বা স্মার্টফোন ব্যবহার না করে। তাদের এই দুঃসাহসিক যাত্রাপথ এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
তাদের ভ্রমণের মূল আকর্ষণ ছিল, আধুনিক জীবনের অপরিহার্য অনুষঙ্গ স্মার্টফোন ও গাইডবুককে দূরে রেখে স্থানীয় মানুষের কাছ থেকে দিকনির্দেশনা নেওয়া।
জাপানের দক্ষিণাঞ্চলীয় কিয়ুশুর সাতা অন্তরীপ থেকে হোক্কাইডোর সয়ামুখী পর্যন্ত প্রায় ৩,২০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। তবে পথিমধ্যে দিকভ্রান্ত হয়ে বেশ কয়েকবার বিড়ম্বনায়ও পড়তে হয়েছে তাদের।
ইউটিউবে প্রকাশিত ভিডিওগুলোতে তাদের এই ভ্রমণের নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে।
তাদের ভ্রমণের একটি বড় দিক ছিল জাপানি সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে যাওয়া। স্থানীয়দের কাছ থেকে পথের সন্ধান নেওয়া, তাদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করা—এসবের মাধ্যমে তারা জাপানি সংস্কৃতির গভীরে প্রবেশ করেছেন।
জাপানি খাবার, যেমন—উডন নুডলস এবং ওকোনোমিয়াকি (এক প্রকার সুস্বাদু প্যানকেক) চেখে দেখা, তাদের ভ্রমণের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল।
তবে, তাদের এই যাত্রা সব সময় মসৃণ ছিল না। একবার, মানচিত্রের অভাবে তারা কিয়ুশুর মিয়াজাকি শহরকে শিকোকু দ্বীপ মনে করে ভুল পথে গিয়েছিলেন।
এরপর তারা যখন সুমো কুস্তির একটি ম্যাচ দেখতে যান, তখনও স্মার্টফোন না থাকার কারণে জাপানের জটিল ট্রেন ব্যবস্থা বুঝতে তাদের বেশ বেগ পেতে হয়।
লুদভিগ জানিয়েছেন, ভাষার সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও জাপানিদের আন্তরিকতা ছিল মুগ্ধ করার মতো। পথনির্দেশিকা চাওয়ার সময় তিনি প্রায়ই ‘ইচিবান’ (সেরা) এবং ‘নান-জিকান’ (কত ঘণ্টা লাগবে) শব্দগুলো ব্যবহার করতেন।
স্থানীয়রা তাদের সাহায্য করার জন্য সবসময় এগিয়ে এসেছেন।
তাদের এই ভ্রমণের ধরন, অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তির থেকে বেশ আলাদা। এর কারণ, লুদভিগ ও তার বন্ধু স্থানীয় সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন এবং মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকে গুরুত্ব দিয়েছেন।
তারা জনসাধারণের ছবি তোলার আগে অনুমতি নিতেও ভুল করেননি।
অন্যদিকে, এমন অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি আছেন, যারা জাপানে বিতর্ক তৈরি করেছেন। এদের মধ্যে অন্যতম হলেন র্যামসি খালিদ ইসমাইল, যিনি ‘জনি সোমালি’ নামে পরিচিত।
তিনি জাপানে বিভিন্ন স্থানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে সমালোচিত হয়েছিলেন।
লুদভিগ আহরেন ও মাইকেল রিভসের জাপান ভ্রমণের এই গল্প, আধুনিক যুগে প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহারের বিপরীতে প্রকৃতির কাছাকাছি থাকার এবং স্থানীয় সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে যাওয়ার এক দারুণ দৃষ্টান্ত।
তথ্য সূত্র: সিএনএন