জ্যাসন করবেট হত্যা: মল্লি ও থমাস মার্টেন্স এখন কেমন আছেন?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা, যেখানে ২০১৬ সালে আইরিশ ব্যবসায়ী জেসন করবett-কে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় অভিযুক্ত করা হয় তাঁর স্ত্রী মলি মার্টেনস এবং তাঁর বাবা থমাস মার্টেনসকে।

ঘটনাটি নিয়ে সম্প্রতি নেটফ্লিক্সে “এ ডেডলি আমেরিকান ম্যারেজ” নামে একটি তথ্যচিত্র মুক্তি পেয়েছে, যা এই হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছে।

২০১৫ সালের ২রা আগস্ট, নর্থ ক্যারোলাইনার একটি বাড়িতে জেসন করবett-কে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তদন্তে জানা যায়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে এবং এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন তাঁর স্ত্রী মলি ও শ্বশুর থমাস।

প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, জেসনকে একটি ব্যাট ও ইট দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। মলি ও থমাস দুজনেই জেসনকে হত্যার কথা স্বীকার করেন, তবে তাঁদের দাবি ছিল আত্মরক্ষার উদ্দেশ্যে এই কাজ করা হয়েছে।

ঘটনার কয়েক বছর পর, জেসনের বোন ট্রেসি লিঞ্চ একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, “মার্টেনস পরিবার শুধু জেসনকে খুন করেনি, তারা তাঁর চরিত্র হননেরও চেষ্টা করেছে।”

কিন্তু ঘটনার সূত্রপাত কিভাবে? জানা যায়, জেসন করবett ছিলেন একজন আইরিশ ব্যবসায়ী এবং তাঁর প্রথম স্ত্রী মার্গারেট ফিটজপ্যাট্রিক-এর মৃত্যুর পর তিনি দুই সন্তান জ্যাক ও সারার দেখাশোনা করতেন।

এরপর তিনি সন্তানদের দেখাশোনার জন্য এক আমেরিকান তরুণী মলি মার্টেনসকে আয়া হিসেবে নিয়োগ করেন। ধীরে ধীরে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং তারা বিয়ে করেন।

বিয়ের পর জেসন, মলি এবং তাঁর দুই সন্তান-সহ সকলে নর্থ ক্যারোলাইনার একটি বাড়িতে বসবাস করতে শুরু করেন।

হত্যাকাণ্ডের দিন, মলি ও থমাস ৯১১-এ ফোন করে জানান যে, তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে এবং জেসন গুরুতর আহত হয়েছেন। থমাস সেই সময় জানান, তিনি জেসনকে মেরে ফেলেছেন।

পুলিশ এসে জেসনের মৃতদেহ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তে জানা যায়, জেসনের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল এবং মাথার আঘাতের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

মলি এবং থমাস-এর দাবি ছিল, জেসন তাঁদের উপর হামলা করার চেষ্টা করলে আত্মরক্ষার্থে তাঁরা এই কাজ করেন।

থমাস জানান, ঘটনার দিন রাতে তিনি জেসনকে মদের ঘোরে দেখেন এবং তাঁদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর জেসন তাঁর মেয়েকে মারধর করতে উদ্যত হলে, তিনি বাধা দেন।

অন্যদিকে, জেসনের পরিবারের দাবি ছিল, মলি জেসনের জীবন বীমার টাকা এবং সন্তানদের নিজের কাছে রাখার জন্য এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।

কারণ, জেসন সন্তানদের নিয়ে আয়ারল্যান্ডে ফিরে যেতে চেয়েছিলেন, যা মলি চাইতেন না।

২০১৭ সালে মলি ও থমাস-কে দ্বিতীয়-ডিগ্রি মার্ডারের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং তাঁদের ২০ থেকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড হয়।

তবে পরে আদালতের রায়ে এই রায় বাতিল হয়ে যায়। এরপর ২০২৩ সালে তাঁরা একটি আপোস-মীমাংসায় আসেন, যেখানে মলি স্বেচ্ছায় মানুষ হত্যার অভিযোগ স্বীকার করেন এবং থমাস একই অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন।

তাঁদের ৫ থেকে ৭৪ মাস কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয় এবং ২০২৪ সালের জুনে তাঁরা মুক্তি পান।

বর্তমানে, মলি টেনেসির নক্সভিলে ফিরে গিয়েছেন এবং থমাস তাঁর বাড়িতে ফিরেছেন।

এই ঘটনার উপর নির্মিত নেটফ্লিক্সের তথ্যচিত্র “এ ডেডলি আমেরিকান ম্যারেজ”-এ তাঁদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে।

তথ্য সূত্র: পিপলস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *