জস: পঞ্চাশ বছর পরেও একটি আতঙ্কের সিনেমা
চলচ্চিত্রের ইতিহাসে “জস” (Jaws) একটি উল্লেখযোগ্য নাম। স্টিভেন স্পিলবার্গ পরিচালিত এই সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার পর দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। শুধু তাই নয়, এটি চলচ্চিত্রের ভাষা এবং দর্শকদের মধ্যে ভীতি জাগানোর ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে।
এই সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার পঞ্চাশ বছর পরেও, এর আবেদন এতটুকুও কমেনি।
“জস”-এর গল্প একটি বিশাল আকারের হাঙরকে কেন্দ্র করে, যা একটি উপকূলীয় শহরের মানুষের জীবন অতিষ্ঠ করে তোলে। শহরের পুলিশ প্রধান, একজন সমুদ্র জীববিজ্ঞানী এবং একজন অভিজ্ঞ হাঙর শিকারীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই সমস্যার সমাধান হয়।
এই সিনেমায় মানুষের জীবনের ভয়, সাহস এবং প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধার মতো বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে।
১৯৭৫ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমাটি বক্স অফিসে দারুণ ব্যবসা করে। এই সিনেমার নির্মাণশৈলী, বিশেষ করে হাঙরের ভয়াবহতা ফুটিয়ে তোলার কৌশল, দর্শকদের মধ্যে এক নতুন ধরনের অভিজ্ঞতার জন্ম দিয়েছিল।
সিনেমায় ব্যবহৃত বিশেষ ইফেক্টগুলো (special effects) সেই সময়ে বেশ প্রশংসিত হয়েছিল।
“জস”-এর গল্প দর্শকদের মাঝে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। অনেকেই এই সিনেমা দেখার পর সমুদ্রে নামতে ভয় পেতেন।
তবে, সিনেমার গল্প বলার ধরন এবং এর চরিত্রগুলো দর্শকদের আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছিল। রয় শাইডার, রিচার্ড ড্রেফাস এবং রবার্ট শ-এর মতো অভিনেতাদের শক্তিশালী অভিনয় সিনেমাটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছিল।
এই সিনেমার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো এর মাধ্যমে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। যদিও সিনেমাটি হাঙরকে ভিলেন হিসেবে উপস্থাপন করেছে, তবে এর মাধ্যমে সামুদ্রিক জীবনের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েছে।
অনেকে এই সিনেমা দেখে সামুদ্রিক জীবন এবং পরিবেশ সম্পর্কে আরও জানতে আগ্রহী হয়েছেন।
তবে, “জস”-এর নেতিবাচক প্রভাবও ছিল। সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার পর অনেক মানুষ হাঙর সম্পর্কে ভুল ধারণা পোষণ করতে শুরু করে। এর ফলে হাঙর নিধনের ঘটনাও বাড়ে।
সিনেমার পরিচালক এবং লেখক দুজনেই হাঙর সম্পর্কে মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে চেষ্টা করেছেন।
“জস” শুধু একটি সিনেমা নয়, এটি একটি সাংস্কৃতিক ঘটনা। এটি প্রমাণ করে, একটি ভালো সিনেমা কিভাবে মানুষের মনে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।
ভয়, উত্তেজনা, এবং প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসার এক দারুণ মিশ্রণ হলো “জস”। সিনেমাটি আজও দর্শকদের জন্য উপভোগ্য, কারণ এর গল্প, নির্মাণশৈলী এবং অভিনয়ের মান আজও অতুলনীয়।
তথ্য সূত্র: The Guardian