বিখ্যাত কমেডিয়ান এবং টক শো হোস্ট জে ল্যানো, যিনি একসময় রাতের টেলিভিশন জগতে রাজত্ব করেছেন, বর্তমানে তার স্ত্রীর দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করছেন।
দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে দাম্পত্য জীবন কাটানোর পর, তার স্ত্রী ম্যাভিস ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ল্যানো তার এই নতুন জীবনের অভিজ্ঞতা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন।
নিজের স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার গভীরতা প্রকাশ করে ল্যানো বলেছেন, তিনি ম্যাভিসের দেখাশোনা করতে পেরে আনন্দিত। তিনি বলেন, “বিয়ের সময় আমরা যে অঙ্গীকার করি, তা হলো সুখে-দুঃখে একে অপরের পাশে থাকা।
আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে সময় কাটাই, তার জন্য রান্না করি, একসঙ্গে টিভি দেখি, এবং এতেই আমি ভালো থাকি।”
ল্যানো আরও জানান, তারা আগে যে জীবন যাপন করতেন, এখনো সেই একই রকম জীবন কাটান, তবে এখন তাকে ম্যাভিসকে খাইয়ে দিতে হয় এবং অন্যান্য অনেক কিছুই করতে হয়।
তিনি বলেন, “আমি এটা উপভোগ করি। তাকে দেখাশোনা করতে ভালো লাগে। ম্যাভিস খুবই স্বাধীনচেতা একজন মানুষ, তাই যখন বুঝি যে আমি তার প্রয়োজন, তখন ভালো লাগে।”
গত বছর, ল্যানো তার স্ত্রীর সম্পত্তির অভিভাবকত্বের জন্য আবেদন করেন এবং তা গ্রহণও করা হয়। ম্যাভিসের স্মৃতিশক্তিকে সচল রাখতে তিনি ফ্ল্যাশ কার্ড ব্যবহার করেন, যা মাঝে মাঝে বেশ মজাদার পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।
ল্যানো জানান, ডিমেনশিয়া আক্রান্ত ব্যক্তিরা সম্ভবত তাদের কাছের মানুষদের কথা ভুলে যান। তিনি বলেন, “আমি ফ্ল্যাশ কার্ডে ছবি ব্যবহার করি।
ছবি দেখিয়ে বলি, ‘মনে আছে? মনে আছে?’ এটা বেশ মজার। আমি বলি, ‘এই যে, এটা প্রেসিডেন্ট ওবামা। আমাদের ডিনার হয়েছিল, মনে আছে?’ তখন ম্যাভিস বলেন, ‘ওহ, আমি তো নই’। তখন আমি বলি, ‘হ্যাঁ, হ্যাঁ, তুমিই তো’।
এই পরিস্থিতিতেও হাসিখুশি থাকতে হয়।”
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, যেখানে পরিবারের বয়স্ক সদস্যদের দেখাশোনার গুরুত্ব অপরিসীম, সেখানে ল্যানোর এই গল্প বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। আমাদের সমাজে, বৃদ্ধ বাবা-মায়ের প্রতি সন্তানদের যত্ন এবং তাদের প্রতি দায়বদ্ধতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
ল্যানোর এই দৃষ্টান্ত আমাদের সমাজের মানুষের জন্য একটি শিক্ষণীয় বিষয় হতে পারে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন