হাঙ্গরের ‘জস’-এর সেই শিশু শিল্পী এখন কোথায়? শুনলে অবাক হবেন!

শিরোনাম: *জোস*-এর সেই শিশু শিল্পী: রুপালি পর্দা থেকে ম্যাপেল সিরাপের জগতে

সত্তর দশকের সাড়া জাগানো সিনেমা *জোস*-এর কথা মনে আছে? যারা সিনেমাটি দেখেছেন, তাদের অনেকেরই নিশ্চয়ই ছোট্ট শন ব্রডির কথা মনে আছে, যিনি ছিলেন প্রধান চরিত্র পুলিশ প্রধান ব্রডির ছোট ছেলে।

সেই চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন জয় মেলো। সিনেমা জগতে তার পথচলার শুরুটা ছিল বেশ চমকপ্রদ, কিন্তু পরবর্তীতে তিনি বেছে নিয়েছিলেন এক ভিন্ন জগৎ।

আসুন, সেই অভিনেতার জীবন সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাক।

ছোট্ট জয় মেলোর বয়স যখন মাত্র ৬ বছর, তখন মা তাকে নিয়ে গিয়েছিলেন একটি অডিশনে। ম্যাসাচুসেটস-এর একটি চার্চের মাধ্যমে জানতে পেরেছিলেন, হলিউডের একটি দল আসছে একটি হাঙর নিয়ে সিনেমা বানাতে, যেখানে দরকার কয়েকজন শিশু অভিনেতা।

বড় দুই ভাই টম এবং জন-এর সঙ্গে অডিশন দিতে গিয়েছিলেন জয়ও। কিন্তু পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গের নজর কাড়েন সবার ছোট জয়।

জয় জানান, তিনি নাকি অন্যদের নকল করতে ভালোবাসতেন। স্পিলবার্গ যখন তার ভাইদের ইন্টারভিউ নিচ্ছিলেন, তখন তিনি একই ভঙ্গিতে তাদের কথা নকল করছিলেন।

ইন্টারভিউ শেষে স্পিলবার্গ বলেন, “তোমরা যেতে পারো, কিন্তু ছোটটিকে থাকতে দাও।” আর এভাবেই শন ব্রডির চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান জয় মেলো।

মারথা’স ভিনিয়ার্ড-এ *জোস*-এর শুটিংয়ের স্মৃতি আজও উজ্জ্বল জয়ের মনে। সেই সময়ের হাঙরটির কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “প্রথমবার যখন এটিকে দেখি, আমার মনে হয়েছিল, হাঙরটির বাকি অংশ কোথায়?”

ছবিতে শনের চরিত্রে অভিনয় ব্রডির চরিত্রে অভিনয় করা রয় শেইডারের কোমল দিকটি ফুটিয়ে তুলেছিল, যা দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়।

শুটিংয়ের সময় রয় শেইডার, রিচার্ড ড্রেফাস এবং রবার্ট শ-এর মতো অভিনেতারা জয়ের সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশে যেতেন। তাদের সঙ্গে বসে খাবার খাওয়া, সিনেমার গল্প করা—সবকিছুই ছিল জয়ের কাছে এক দারুণ অভিজ্ঞতা।

সিনেমার সেট ছিল এক বিশাল পরিবারের মতো, যেখানে সবাই মিলেমিশে কাজ করতেন।

সিনেমাটি যে বক্স অফিসে এত বড় সাফল্য পাবে, তা হয়তো কেউই কল্পনা করেননি। মুক্তির পর *জোস* শুধু একটি সিনেমা ছিল না, এটি পরিণত হয়েছিল এক সংস্কৃতির অংশে।

যদিও সিনেমাটি ছিল কিছুটা ভয়ের, তবে মা-বাবার কারণে জয় পুরো সিনেমাটি হলে বসে দেখতে পারেননি। সিনেমার একটি দৃশ্যে যখন স্থানীয় জেলে বেন গার্ডনারের কাটা মুণ্ডু পাওয়া যায়, তখন বিষয়টি তাকে বেশ নাড়া দেয়।

*জোস*-এর সাফল্যের পর অনেকেই ভেবেছিলেন, জয় হয়তো অভিনয় চালিয়ে যাবেন। কিন্তু তিনি বেছে নিয়েছিলেন অন্য পথ।

পরবর্তীকালে *জোস: দ্য রিভেঞ্জ* (১৯৮৭) ছবিতে শনের মৃত্যু দেখানো হয়, যা জয়কে হতাশ করে।

অভিনয় জগৎ থেকে দূরে সরে জয় এখন ভার্মন্টের একটি ম্যাপেল সিরাপ কোম্পানিতে কাজ করেন। মাঝে মাঝে তিনি *জোস* নিয়ে তার স্মৃতিচারণ করেন।

রয় শেইডারের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক ছিল, এমনকি অসুস্থ হওয়ার আগে পর্যন্ত তাদের মধ্যে যোগাযোগ ছিল।

আজও জয় মেলো *জোস*-এর একজন ভক্ত। প্রতি বছর তিনি তার পরিবার, ছেলে-মেয়ে এবং নাতি-নাতনিদের সঙ্গে বসে সিনেমাটি দেখেন।

সিনেমার ৫০ বছর পূর্তিতে তিনি বলেন, “এখন যখন আমি বলি, আমি *জোস*-এ অভিনয় করেছি, তখন অনেকে বিশ্বাস করতে চায় না। এরপর যখন তারা আমার মুখ দেখে, তখন বুঝতে পারে।”

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *