যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মোকাবিলায় এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির মধ্যে প্রভাব বিস্তারে ক্রমশ সক্রিয় হচ্ছেন ইলিনয়ের গভর্নর জেবি প্রিটজকার। ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণের সম্ভাবনাকে সামনে রেখে তিনি এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
বিভিন্ন সূত্রে খবর, ট্রাম্পকে চ্যালেঞ্জ জানানোর পাশাপাশি দলের অভ্যন্তরেও নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছেন এই প্রভাবশালী ডেমোক্র্যাট নেতা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গভর্নর প্রিটজকার মূলত দুটি প্রধান ধারায় কাজ করছেন। প্রথমত, তিনি বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে গিয়ে বক্তৃতা রাখছেন, যা সরাসরি ট্রাম্প এবং তাঁর নীতির সমালোচনায় ভরপুর।
দ্বিতীয়ত, ডেমোক্রেটিক পার্টির বিভিন্ন কার্যক্রমকে অর্থ দিয়ে সহায়তা করছেন, যা তাঁর রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারে সহায়ক হচ্ছে। এছাড়া, আসন্ন নির্বাচনে দলের কৌশল নির্ধারণেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
প্রিটজকারের এই সক্রিয়তা অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তিনি মনে করেন, ট্রাম্পের উত্থান আমেরিকার জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ। এমনকি তিনি এটিকে নাৎসি জার্মানির উত্থানের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
প্রিটজকার মনে করেন, ডেমোক্রেটিক পার্টিকে আরও দৃঢ় এবং সাহসী হতে হবে, ট্রাম্পের মোকাবিলায় কোনো প্রকার দ্বিধা প্রকাশ করা উচিত নয়।
প্রিটজকারের রাজনৈতিক কৌশল শুধু বক্তৃতা বা অর্থ যোগান পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয়। তিনি বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, ডেমোক্রেটিক পার্টির গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করছেন এবং দলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন।
এমনকি আসন্ন নির্বাচনে দলের কৌশল কী হবে, সে বিষয়েও তিনি দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন।
প্রিটজকারের এই উদ্যোগের পেছনে মূল কারণ হলো, ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা। যদিও তিনি সরাসরি এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি, তবে তাঁর গতিবিধি সেই ইঙ্গিতই দেয়।
অনেকেই মনে করেন, গভর্নর প্রিটজকার সম্ভবত নিজের নির্বাচনী প্রচারণার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করতে পারেন, যেমনটা তিনি আগে করেছেন।
তবে, প্রিটজকারের এই পদক্ষেপগুলো সব মহলে ভালোভাবে গৃহীত হচ্ছে না। কেউ কেউ তাঁর রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
আবার অনেকে মনে করেন, একজন বিলিয়নেয়ার হয়েও তিনি কিভাবে শ্রমিক শ্রেণির মানুষের কথা ভাববেন? যদিও প্রিটজকার এসব সমালোচনাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ।
তিনি বরাবরই বলে এসেছেন, তিনি সাধারণ মানুষের পাশে আছেন এবং তাঁদের অধিকারের জন্য লড়াই করতে প্রস্তুত।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জেবি প্রিটজকারের এই উত্থান আমেরিকার রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করতে পারে। একদিকে যেমন ট্রাম্প বিরোধী শিবিরকে শক্তিশালী করবে, তেমনি ডেমোক্রেটিক পার্টির মধ্যে নতুন নেতৃত্ব তৈরির সম্ভাবনাও তৈরি হবে।
তবে, তাঁর এই পথ কত মসৃণ হবে, তা সময়ই বলবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন