বিখ্যাত ব্রডওয়ে প্রযোজক জেফরি সেলার, যিনি ‘রেন্ট’ এবং ‘হ্যামিল্টন’-এর মতো আলোড়ন সৃষ্টিকারী প্রযোজনা করেছেন, সম্প্রতি আত্মপ্রকাশ করেছেন তার আত্মজীবনী ‘থিয়েটার কিড’ নিয়ে। বইটিতে তিনি তার ব্যক্তিগত জীবন এবং ব্রডওয়ের কঠিন দিনগুলোর কথা তুলে ধরেছেন, যা অনেকের কাছেই অজানা।
মিশিগানের ওক পার্কে এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেওয়া সেলার কীভাবে ব্রডওয়ের মঞ্চে নিজের জায়গা করে নিলেন, সেই গল্পই এই বইয়ের মূল বিষয়। আশির দশকে ব্রডওয়ের কঠিন সময়ে তিনি কিভাবে টিকে ছিলেন, সেই সময়ে তার ব্যক্তিগত জীবন কেমন ছিল, সে সব বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছেন তিনি।
সেলার জানিয়েছেন, এই বইটি লেখার মূল উদ্দেশ্য ছিল নিজের ভেতরের মানুষটাকে খুঁজে বের করা।
“আমি সবসময় চেয়েছি এমন কিছু করতে যা আমাকে গভীরভাবে নাড়া দেয়,” সেলার বলেন। “আমার মনে হয়, যারা নিজেদের অন্যরকম মনে করে, তাদের জন্য এই বইটি অনেক কিছু।”
‘রেন্ট’-এর সাফল্যের পেছনের গল্পও বলেছেন সেলার। এই প্রযোজনাটি কেবল তার জীবনকেই পরিবর্তন করেনি, বরং সঙ্গীত থিয়েটারের ধারাকেও নতুন পথে চালিত করেছে। তিনি জানান, ‘রেন্ট’ আসার আগে ব্রডওয়ের জগৎটা আজকের মতো এত বৈচিত্র্যপূর্ণ ছিল না। এই প্রযোজনাটি নতুন ধরনের পরীক্ষামূলক কাজের সুযোগ তৈরি করে দেয়।
সেলার, যিনি চারটি টনি অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন, তার সাফল্যের পেছনে ছিল কঠোর পরিশ্রম আর একাগ্রতা। তিনি ব্রডওয়ের সেই সময়ের কথা বলেছেন, যখন সেখানে ভিন্ন ধরনের গল্প বলার সুযোগ কম ছিল। তিনি এমন সব প্রযোজনা তৈরি করতে চেয়েছিলেন যা দর্শকদের হৃদয়ে দাগ কাটতে পারে।
‘হ্যামিল্টন’-এর মতো বিশাল সাফল্যের পরও সেলার মনে করেন ‘রেন্ট’-এর অবদান অনস্বীকার্য। তার মতে, ‘রেন্ট’-এর পথ ধরেই এসেছে ‘ইন দ্য হাইটস’ এবং ‘ডিয়ার ইভান হ্যানসেন’-এর মতো জনপ্রিয় প্রযোজনাগুলো।
‘থিয়েটার কিড’ বইটিতে সেলার তার ব্যক্তিগত জীবন, পেশাগত উত্থান-পতন, এবং ব্রডওয়ের সোনালী দিনের নানা দিক তুলে ধরেছেন। বইটিতে তিনি তার বন্ধু এবং সহকর্মী, বিশেষ করে ‘রেন্ট’-এর নাট্যকার ও সুরকার জোনাথন লারসনের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো স্মরণ করেছেন। এই আত্মজীবনীতে ব্রডওয়ের একজন প্রযোজক হিসেবে তার অভিজ্ঞতার পাশাপাশি, একজন মানুষ হিসেবে তার ভেতরের গল্পগুলোও উঠে এসেছে।
জেফরি সেলারের এই আত্মজীবনী শুধু একজন প্রযোজকের আত্মকথা নয়, বরং এটি সাফল্যের পথে এক কঠিন যাত্রার প্রতিচ্ছবি। যারা নিজেদের স্বপ্ন পূরণ করতে চান, তাদের জন্য এটি একটি অনুপ্রেরণামূলক গল্প।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস