**তেরো ঘণ্টার সাঁতারে জেলিফিশের কামড়, কঠিন চ্যালেঞ্জ জয় করে তাক লাগানো মার্কিন কিশোরী**
সমুদ্র সাঁতারের জগৎ-এ এক বিস্ময়কর কীর্তি গড়েছেন ১৭ বছর বয়সী মার্কিন কিশোরী মায়া মেরহিগ। সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডের কুক প্রণালী পাড়ি দিয়েছেন তিনি, যেখানে প্রতিকূলতা ছিল অসংখ্য।
১৪ ঘণ্টার সাঁতারে কয়েক হাজার জেলিফিশের কামড় সহ্য করে, প্রবল স্রোতের বিরুদ্ধে লড়াই করে এই অসাধ্য সাধন করেছেন ক্যালিফোর্নিয়ার এই তরুণী।
মায়ার এই দুঃসাহসিক অভিযান শুধু একটি সাঁতার ছিল না, বরং তার ‘ওশেন্স সেভেন’ নামক কঠিন চ্যালেঞ্জের একটি অংশ। এই চ্যালেঞ্জে বিশ্বের সাতটি কঠিন সমুদ্রপথ পাড়ি দিতে হয় এবং মায়া সেই লক্ষ্যের দিকেই এগিয়ে চলেছেন।
কুক প্রণালী অতিক্রম করার আগে তিনি হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের মোলোকাই চ্যানেল, ক্যালিফোর্নিয়ার ক্যাটালিনা চ্যানেল এবং ইংলিশ চ্যানেলও সফলভাবে সাঁতরে পার হয়েছেন।
মায়ার এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে কঠোর পরিশ্রম আর অদম্য মানসিক শক্তি। জেলিফিশের কামড় তার শরীরের চামড়ায় জ্বালা ধরিয়ে দিচ্ছিল, কিন্তু তিনি ছিলেন অবিচল।
প্রতি মিনিটে প্রায় ২৫ বার তিনি জেলিফিশের আক্রমণের শিকার হচ্ছিলেন। সাঁতার কাটার সময় প্রতি তিনবার স্ট্রোকের পরেই যেন তার শরীরে আঘাত হানছিল এই জলজ প্রাণীগুলো।
কিন্তু তিনি হার মানেননি। বরং, সাঁতারের সময় রাতের অন্ধকারে নিজেকে আরও বেশি শান্ত রাখতে চেষ্টা করেছেন, যাতে সমুদ্রের গভীরতা বা অজানা জীবের ভয় তাকে গ্রাস করতে না পারে।
মেরহিগ শুধু একজন প্রতিভাবান সাঁতারুই নন, তিনি একজন সমাজ সচেতন মানুষও। শিশুদের ক্যান্সার গবেষণা তহবিলে অর্থ সংগ্রহের জন্য তিনি ‘সুইম অ্যাক্রস আমেরিকা’ নামক একটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত।
এরই মধ্যে তিনি ১ লক্ষ ৩০ হাজার মার্কিন ডলারেরও বেশি অর্থ সংগ্রহ করেছেন। ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশুদের কথা মনে করে, তাদের সুস্থ জীবনের স্বপ্ন দেখে, তিনি কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন।
মায়া মেরহিগ-এর এই দৃষ্টান্ত তরুণ প্রজন্মের জন্য এক বিরাট অনুপ্রেরণা। শারীরিক ও মানসিক দৃঢ়তার মাধ্যমে যেকোনো প্রতিকূলতাকে জয় করা সম্ভব, তা তিনি প্রমাণ করেছেন।
তার এই সাফল্যের গল্প শুধু একটি সাঁতারের কাহিনী নয়, বরং এটি আত্মবিশ্বাস, সাহস এবং মানুষের অদম্য ইচ্ছাশক্তির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। ২০২৮ সালের মধ্যে তিনি ওশেন্স সেভেন চ্যালেঞ্জ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে অবিচলভাবে এগিয়ে চলেছেন।
আমরা তার ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানাই।
তথ্য সূত্র: সিএনএন