বাংলার ক্রীড়া জগতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন হতে চলেছে। আগামী শনিবার, খেলাধুলার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একজন নারী, জেন পাওল, মেজর লীগ বেসবলের (MLB) একটি নিয়মিত খেলায় আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছেন।
আটলান্টা ব্রাভস এবং মায়ামি মার্লিন্সের মধ্যে হতে যাওয়া ডাবলহেডার ম্যাচে তিনি এই ঐতিহাসিক কাজটি করবেন।
জেন পাওলের এই সাফল্য শুধু তাঁর একার নয়, বরং বিশ্বজুড়ে খেলাধুলায় নারীদের জন্য এক বিরাট অনুপ্রেরণা। পুরুষতান্ত্রিক এই খেলার জগতে, যেখানে সাধারণত পুরুষদের একচ্ছত্র আধিপত্য দেখা যায়, সেখানে একজন নারীর এই পদে আসা নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
এর আগে অবশ্য জেনকে বসন্তকালীন প্রশিক্ষণ ম্যাচগুলোতে আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে, কিন্তু কোনো নিয়মিত লীগে এই প্রথম।
আম্পায়ারিংয়ের জগতে জেন পাওলের যাত্রাটা শুরু হয়েছিল ২০১৫ সালে, যখন তিনি ওহাইও অঙ্গরাজ্যের সিনসিনাটিতে অনুষ্ঠিত এমএলবি আম্পায়ার ক্যাম্পে অংশ নিয়েছিলেন। এরপর ২০১৬ সালে তিনি মাইনর লীগ, অর্থাৎ ছোটদের লীগে খেলা পরিচালনা করেন।
এর আগে তিনি হফস্ট্রা ইউনিভার্সিটিতে সফটবল খেলতেন।
এমএলবি কমিশনার রবার্ট ডি. ম্যানফ্রেড জুনিয়র জেন পাওলের এই কৃতিত্বকে একটি “ঐতিহাসিক অর্জন” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “জেন তাঁর কঠোর পরিশ্রম, একাগ্রতা এবং খেলার প্রতি ভালোবাসার ফলস্বরূপ এই সুযোগটি পেয়েছেন।
আমরা তাঁর এই সাফল্যে গর্বিত।”
খেলাধুলা বিষয়ক কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে নারীদের সাফল্যের দৃষ্টান্ত নতুন নয়। ১৯৯৭ সালে বাস্কেটবলে (NBA) ভায়োলেট পামার এবং ডি কান্টনার-এর মতো নারী রেফারির আগমন ঘটেছিল।
এছাড়া, ২০১৫ সালে সারা থমাস ন্যাশনাল ফুটবল লিগের (NFL) নিয়মিত খেলায় অফিশিয়েটিং ক্রু-এর সদস্য হিসেবে প্রথম নারী হিসেবে ইতিহাস গড়েন। তিনি সুপার বোলেও খেলা পরিচালনা করেছেন।
ফুটবলে (FIFA) স্টেফানি ফ্র্যাপার্ট, ২০২২ সালে পুরুষদের বিশ্বকাপ ম্যাচে খেলা পরিচালনা করে নারী হিসেবে প্রথম স্থান অর্জন করেন।
জেন পাওলের এই সাফল্য নিঃসন্দেহে আমাদের দেশের ক্রীড়াঙ্গনের নারীদেরও উৎসাহিত করবে। তাঁর এই যাত্রা প্রমাণ করে, কঠোর পরিশ্রম ও ইচ্ছাশক্তি থাকলে যেকোনো বাধা জয় করা সম্ভব।
খেলাধুলাসহ সকল ক্ষেত্রেই নারীরা যে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে সক্ষম, জেন পাওলের ঘটনা তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
তথ্য সূত্র: সিএনএন