জেরি লি লুইসের পরিবার: মৃত্যুর পরে সন্তানদের জীবন!

শিরোনাম: “দ্য কিলার”-এর পরিবার: কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পীর জীবনের গল্প

এক সময়ের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী জেরি লি লুইসের জীবন ছিল ঘটনাবহুল। “দ্য কিলার” নামে পরিচিত এই রক অ্যান্ড রোল কিংবদন্তি সঙ্গীতের জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন। “গ্রেট বলস অফ ফায়ার”, “হোল লটা শেকিন’ গোয়িং অন” এবং “ব্রেথলেস”-এর মতো কালজয়ী গান উপহার দিয়ে তিনি আজও সঙ্গীতপ্রেমীদের হৃদয়ে বেঁচে আছেন। তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও ছিল আলোচনা ও সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

জেরি লি লুইস সাতবার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। তাঁর পরিবার ছিল বিশাল। ডরথি বার্টন, স্যালি জেন মিচাম, মায়রা গেল ব্রাউন, জ্যারেন এলিজাবেথ গান পাটে, শন স্টিফেন্স, কেরি ম্যাককারভার এবং জুডিথ ব্রাউন—এই সাত নারীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের সূত্রে জন্ম হয় তাঁর সন্তানদের। পুত্রদের মধ্যে ছিলেন জেরি লি লুইস জুনিয়র, রনি গাই লুইস, স্টিভ অ্যালেন লুইস এবং জেরি লি লুইস থ্রি। এছাড়াও, কন্যা ছিলেন ফোবি অ্যালেন লুইস-লফটিং। জানা যায়, লোরি লি লুইস ল্যাঙ্কাস্টার নামে তাঁর আরও এক কন্যা ছিলেন, যাঁর মা ছিলেন জ্যারেন এলিজাবেথ গান পাটে।

জেরি লি লুইসের জীবনে শোকের ছায়া নেমে আসে বহুবার। অল্প বয়সেই তিনি তাঁর দুই ছেলেকে হারান। ১৯৬২ সালে মাত্র ৩ বছর বয়সে স্টিভ নামের ছেলেটি একটি সুইমিং পুলে ডুবে মারা যায়। ১৯৭৩ সালে, ১৯ বছর বয়সে, এক গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত হন জেরি লি লুইস জুনিয়র। ১৯৭৮ সালে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেরি লি লুইস বলেছিলেন, “মা এবং দুই ছেলের মৃত্যু আমাকে ভেঙে দিয়েছিল। আমি খুব মদ্যপান করতাম। স্বাভাবিক হতে এক বোতল টেকিলা লাগত। আমি গান রেকর্ড করতে পারতাম না।”

২০১৯ সালে জেরি লি লুইস সামান্য স্ট্রোক করেন। অবশেষে, ২৮ অক্টোবর, ২০২২ সালে ৮৭ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

জেরি লি লুইসের সন্তানদের জীবনও কম ঘটনাবহুল নয়।

জেরি লি লুইস জুনিয়র:
১৯৫৪ সালে, স্যালি জেন মিচামের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর জেরি লি লুইস জুনিয়রের জন্ম হয়। বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে জুনিয়রও সঙ্গীতের জগতে প্রবেশ করেন এবং তাঁর ব্যান্ডে ড্রামার হিসেবে যোগ দেন।

রনি গাই লুইস:
জেরি লি লুইস ও স্যালি জেন মিচামের দ্বিতীয় সন্তান রনি গাই লুইস, জন্ম ১৯৫৬ সালে। তিনি প্রচারের আলো থেকে দূরেই জীবন কাটিয়েছেন।

স্টিভ অ্যালেন লুইস:
১৯৫৯ সালে, মায়রা গেল ব্রাউনের গর্ভে জন্ম হয় স্টিভ অ্যালেন লুইসের। মাত্র ৩ বছর বয়সে তাঁর অকাল মৃত্যু হয়।

ফোবি অ্যালেন লুইস-লফটিং:
১৯৬৩ সালে, মায়রা গেল ব্রাউনের কোল আলো করে আসে ফোবি অ্যালেন। ১৯৭০ সালে মায়রা ও জেরির বিবাহবিচ্ছেদ হয়। পরে ফোবি ফটোগ্রাফি নিয়ে পড়াশোনা করেন। বাবার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভালো ছিল, তবে বাবার ম্যানেজার হিসেবেও তিনি কাজ করেছেন। পরবর্তীকালে, পিতার সঙ্গে তাঁর কিছু বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য হয় এবং আইনি লড়াই পর্যন্ত গড়ায়।

লোরি লি লুইস ল্যাঙ্কাস্টার:
১৯৭২ সালে জ্যারেন এলিজাবেথ গান পাটের গর্ভে জন্ম হয় লোরি লি লুইসের।

জেরি লি লুইস থ্রি:
কেরি লিন ম্যাককারভারের সঙ্গে সম্পর্কের ফসল জেরি লি লুইস থ্রি। ১৯৮৭ সালে তাঁর জন্ম হয়। জানা যায়, ২০২৩ সালে পরিবারের সদস্যরা তাঁদের বসতবাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন।

জেরি লি লুইসের জীবন ছিল আনন্দ, বেদনা, সাফল্য এবং ব্যর্থতার এক মিশ্রণ। তাঁর গান আজও মানুষের মনে গেঁথে আছে, তেমনই তাঁর পরিবারের গল্পও আলোচনার বিষয়।

তথ্যসূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *