জার্মানিতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোয় কারাবরণ করলেন এক যাজক। জার্মানির ন্যুর্নবার্গ শহরে পরিবেশ আন্দোলনকারীদের একটি সড়ক অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার কারণে জরিমানা এড়াতে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
খবরটি দিয়েছে এপি।
খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের একটি বিশেষ দল, জেসুইট সম্প্রদায়ের ফাদার জর্গ আল্ট। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সোচ্চার এই যাজক, গত আগস্ট মাসে ন্যুর্নবার্গে এক প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন।
এই ঘটনার জন্য আদালত তাকে ৫০০ ইউরো জরিমানা করে। কিন্তু ফাদার আল্ট জানিয়েছেন, তিনি এই জরিমানা দিতে রাজি নন।
কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, সন্ন্যাস জীবনের কারণে তার নিজস্ব কোনো আয় নেই। তাছাড়া, জরিমানা দিলে তা তার সম্প্রদায়ের অন্য ভাইদের ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
তাই তিনি কারাবরণ করতে রাজি হয়েছেন। মঙ্গলবার থেকে তিনি প্রায় ২৫ দিনের কারাদণ্ড ভোগ করতে শুরু করেছেন।
কারাগারে প্রবেশের আগে ৬৩ বছর বয়সী ফাদার আল্ট বলেন, “আমি জানি, এই কাজটি করতে আমার ভালো লাগছে না। বিশেষ করে, এই বয়সে আমার স্বাস্থ্যও খুব ভালো নেই।
কিন্তু আমার মনে হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য সম্ভবত এটাই আমার হাতে থাকা শেষ প্রতিবাদ।”
২০২২ সালের আগস্টে, ফাদার আল্ট এবং আরও প্রায় ৪০ জন কর্মী ন্যুর্নবার্গের একটি রাস্তার মোড়ে নিজেদের হাত আঠা দিয়ে আটকে যান, যার ফলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর জন্যই এই কাজটি করা হয়েছিল।
জার্মানিতে প্রায়শই এমন প্রতিবাদ দেখা যায়, যেখানে কর্মীরা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। তবে, এই ধরনের প্রতিবাদের প্রতিক্রিয়া সব সময় একরকম হয় না।
কিছু জার্মান নাগরিক প্রতিবাদকারীদের সমর্থন করেন, আবার কেউ কেউ তাদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান। এমনকি, জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজও জলবায়ু কর্মীদের তীব্র সমালোচনা করেছেন।
তিনি তাদের ‘উন্মাদ’ বলেও অভিহিত করেছেন।
ফাদার আল্ট এর আগেও প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিলেন। এর আগে, মিউনিখে একটি সড়ক অবরোধে অংশ নেওয়ার জন্য তাকে জরিমানা করা হয়েছিল।
ফাদার আল্ট জানিয়েছেন, তিনি অন্যান্য জলবায়ু কর্মীদের প্রতি সংহতি জানাতেও এই কারাদণ্ডের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
জলবায়ু পরিবর্তন বর্তমানে একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এর প্রভাব থেকে বাংলাদেশও মুক্ত নয়।
নিরন্তর সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, বন্যা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এখানকার মানুষজন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পরিবেশ রক্ষার জন্য তাই বিশ্বজুড়ে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)