হলিউডের সোনালী যুগের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন জোয়ান ক্রফোর্ড। রুপালি পর্দার এই কিংবদন্তীর ব্যক্তিগত জীবন, বিশেষ করে তাঁর সন্তান-সন্ততিদের সঙ্গে সম্পর্ক, আজও আলোচনার বিষয়।
তাঁর চার সন্তানের জীবনযাত্রা ছিল বিচিত্র এবং তাঁদের মধ্যেকার সম্পর্কও ছিল অত্যন্ত জটিল।
জোয়ান ক্রফোর্ড মোট চারবার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন, কিন্তু তাঁর দাম্পত্য জীবন সুখের ছিল না। বিবাহ বিচ্ছেদের পর তিনি একাই সন্তানদের দত্তক নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
সে সময়ে, ১৯৩৯ সালে, ক্যালিফোর্নিয়ার আইনে অবিবাহিত কোনো নারীর সন্তান দত্তক নেওয়ার অনুমতি ছিল না। তবে তিনি কৌশল অবলম্বন করে প্রথমে ১৯৩৯ সালে লাস ভেগাসে ক্রিস্টিনা নামের এক কন্যাকে দত্তক নেন।
পরবর্তীকালে, তিনি আরও দুই পুত্র ও দুই কন্যা সন্তানের অভিভাবক হন।
ক্রিস্টিনা ক্রফোর্ড ছিলেন জোয়ান ক্রফোর্ডের সবচেয়ে বড় সন্তান। তিনি তাঁর মায়ের সম্পর্কে ‘মমmy ডিarest’ (Mommie Dearest) নামে একটি আত্মজীবনী লেখেন, যা ১৯৭৮ সালে প্রকাশিত হয়।
বইটিতে ক্রিস্টিনা তাঁর মায়ের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ আনেন। বইটিতে মা ও মেয়ের সম্পর্ক তিক্তভাবে চিত্রিত করা হয়েছে।
ক্রিস্টিনার এই অভিযোগগুলি হলিউডে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। পরবর্তীকালে ১৯৮১ সালে এই আত্মজীবনী অবলম্বনে একই নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়, যেখানে ফেয় ডুনওয়ে (Faye Dunaway) জোয়ান ক্রফোর্ডের চরিত্রে অভিনয় করেন।
ক্রিস্টিনা তাঁর মায়ের জীবন নিয়ে তৈরি এই চলচ্চিত্রে মায়ের নিষ্ঠুর রূপ ফুটিয়ে তুলেছিলেন।
ক্রিস্টোফার ক্রফোর্ড ছিলেন জোয়ান ক্রফোর্ডের দত্তক পুত্র। যদিও তিনি জনসাধারণের সামনে খুব একটা কথা বলেননি, তবে ক্রিস্টিনার সঙ্গে তাঁর একটি দৃঢ় সম্পর্ক ছিল।
ক্রিস্টোফারও তাঁর মায়ের সঙ্গে সম্পর্কের তিক্ততা অনুভব করেছিলেন।
জোয়ান ক্রফোর্ডের আরও দুই কন্যা ছিলেন – ক্যাথি ও সিন্ডি। তাঁরা যমজ ছিলেন এবং ১৯৪৭ সালে তাঁদের জন্ম হয়।
ক্যাথি ও সিন্ডি, ক্রিস্টিনার অভিযোগের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করতেন। তাঁদের মতে, মা হিসেবে জোয়ান ক্রফোর্ড ছিলেন খুবই ভালো এবং যত্নশীল।
জোয়ান ক্রফোর্ডের সন্তানদের মধ্যে সম্পর্কের এই ভিন্নতা এবং তাঁদের ব্যক্তিগত জীবনের উত্থান-পতন আজও মানুষের মনে কৌতূহল জাগায়।
হলিউডের খ্যাতি এবং জৌলুসের আড়ালে লুকিয়ে থাকা এই পারিবারিক গল্প, সম্পর্কের জটিলতা এবং ভালোবাসার টানাপোড়েন নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে।
তথ্যসূত্র: পিপল