নাসকার তারকা জোয়ি লোগানোর প্রেমিকা: কিভাবে শুরু হয়েছিল তাদের প্রেম?

নাসকার (NASCAR) রেসিংয়ের জনপ্রিয় চালক জোয়ি লোগানো এবং তাঁর স্ত্রী ব্রিটানি লোগানোর প্রেম ও দাম্পত্য জীবনের গল্প অনেকের কাছেই অনুপ্রেরণা। তাঁদের সম্পর্কের শুরুটা হয়েছিল স্কুলের দিনগুলোতে, কিন্তু প্রথম দেখাতেই যে প্রেম হয়েছিল, তা নয়।

জোয়ি এবং ব্রিটানির প্রথম দেখা হয় যখন তাঁরা দুজনেই জোয়ির পরিবারের একটি আইস স্কেটিং রিঙ্কে কাজ করতেন। ব্রিটানি সেখানে খাবার পরিবেশন করতেন আর জোয়ি চালাতেন জাম্বোনি (বরফের উপরিভাগ মসৃণ করার যন্ত্র)। ২০১৬ সালে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আগে তাঁদের সম্পর্কের পথ খুব মসৃণ ছিল না।

ছোটবেলায় জোয়ি খুব একটা মিশুক ছিলেন না। বন্ধুদের সঙ্গে তাঁর দেখা হতো মূলত রেসিং ট্র্যাকগুলোতে। তাই নিজের বোনের বন্ধু ব্রিটানিকে ভালো লাগলেও, সরাসরি কথা বলার সাহস ছিল না তাঁর। বোনের মাধ্যমেই আলাপ জমাতে চেয়েছিলেন, কিন্তু সেই চেষ্টা খুব একটা সফল হয়নি।

ব্রিটানি পরে একবার বলেছিলেন, তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎটা বেশ “অদ্ভূত” ছিল। এরপর কয়েক মাস তাঁরা ডেটিং করলেও, জোয়িকে “বন্ধুত্বের” পর্যায়েই রেখেছিলেন ব্রিটানি। কারণ, তাঁর মতে, জোয়ি ছিলেন “তখনকার সময়ের সবচেয়ে অদ্ভূত ১৬ বছরের কিশোর।”

তবে সময় যায়, আর সম্পর্কের বাঁধনও নতুন রূপ নেয়। অবশেষে, তাঁরা আবার কাছাকাছি আসেন এবং এক দশকের বেশি সময় ধরে একসঙ্গে পথ চলছেন। বর্তমানে, এই দম্পতি নেটফ্লিক্সের “NASCAR: Full Speed” সিজন ২-এ একসঙ্গে কাজ করছেন।

আসলে কে এই ব্রিটানি লোগানো?

ছোটবেলায় ব্রিটানি ক্যালিফোর্নিয়ায় জন্ম গ্রহণ করেন। পরে তাঁর পরিবার উত্তর ক্যারোলিনায় চলে আসে। সেখানেই তিনি হাই স্কুল ও ইউনিভার্সিটি অফ নর্থ ক্যারোলিনা-শার্লটে পড়াশোনা করেন। ছোটবেলায় তিনি ফিগার স্কেটিং করতেন, আর সে কারণেই জোয়ির বোন ড্যানিয়েলের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব হয়।

জোয়ি এবং ব্রিটানি দুজনেই ছিলেন তাঁদের হাই স্কুলের ‘প্রেমিক যুগল’। তাঁদের প্রথম দেখা হয় জোয়ির পরিবারের আইস স্কেটিং রিঙ্কে। তখন জোয়ির বয়স ছিল ১৬ এবং ব্রিটানির ১৫ বছর। ব্রিটানি সেখানে খাবার পরিবেশনের কাজ করতেন, আর জোয়ি চালাতেন আইস সার্ফেস ক্লিনার।

জোয়ি জানান, ব্রিটানিকে স্কেটিং করতে দেখেই তিনি পছন্দ করেন। এরপর বোনকে অনুরোধ করে তাঁর সঙ্গে আলাপ জমাতে চান। যদিও প্রথম আলাপটা তেমন জমেনি।

একবার একটি অনুষ্ঠানে জোয়ি, ব্রিটানির চেয়ার টেনে ধরেন। ব্রিটানি এতে বেশ বিব্রত হন। পরে অবশ্য জোয়ি, ব্রিটানিকে রিঙ্কে স্কেটিং করতে নিয়ে যান। সেই রাতেই তাঁরা দু’জনের মধ্যে গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়।

২০১৩ সালের নভেম্বরে জোয়ি ও ব্রিটানি তাঁদের বাগদানের ঘোষণা করেন। জোয়ি পেশায় রেসিং কার ড্রাইভার হওয়ায়, আংটি পরানোর পাশাপাশি, একটি নতুন গাড়ি উপহার দিয়ে প্রস্তাবটি আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছিলেন।

ব্রিটানির একটি পুরনো জীপ ছিল, যা প্রায়ই খারাপ হতো। তাই ব্রিটানির স্বপ্নের গাড়ি থান্ডারবার্ড কিনে, তার সঙ্গেই আংটি পরিয়ে দেন জোয়ি।

২০১৪ সালের ১৩ই ডিসেম্বর, তাঁরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। উত্তর ক্যারোলিনার ঐতিহাসিক বিল্টমোর এস্টেটে তাঁদের বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। বিয়ের পরের দিন, জোয়ি তাঁর অনুভূতির কথা জানিয়ে সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, “এই সুন্দরীর সঙ্গে সারা জীবন কাটানোর চেয়ে আনন্দের আর কিছু হতে পারে না।”

তাঁদের তিনটি সন্তান রয়েছে: জানুয়ারি ২০১৮ সালে জন্ম হয় প্রথম সন্তান হাডসন, মে ২০২০ সালে জন্ম নেয় দ্বিতীয় সন্তান জেমিসন, এবং ফেব্রুয়ারি ২০২২ সালে তাঁদের ঘর আলো করে আসে কন্যাসন্তান এমিলিয়া।

জোয়ি এবং ব্রিটানি দুজনেই ‘জোয়ি লোগানো ফাউন্ডেশন’-এর সঙ্গে যুক্ত। ব্রিটানি এই ফাউন্ডেশনের ভাইস-চেয়ারপার্সন হিসেবে কাজ করেন। এই ফাউন্ডেশন শিশুদের এবং তরুণদের সাহায্য করে থাকে, যারা বিভিন্ন ধরনের সংকট মোকাবেলা করছে।

বর্তমানে, তাঁরা দুজনেই ফস্টার প্যারেন্ট হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। ব্রিটানির মা-ও এই কাজের সঙ্গে জড়িত। তাঁরা মনে করেন, সৃষ্টিকর্তা তাঁদের এই পথে এগিয়ে যেতে বলছেন।

তথ্য সূত্র: পিপলস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *