গ্যাসির সেই ভয়ঙ্কর মৃত্যু: শেষ কথাগুলো আজও শিউরে তোলে!

কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার জন ওয়েইন গেসি, যিনি ‘কিলার ক্লাউন’ নামেই পরিচিত ছিলেন, ১৯৯৪ সালের ১০ই মে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়েসে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন। সত্তরের দশকে কমপক্ষে তেত্রিশ জন তরুণ ও যুবককে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন তিনি।

গেসি’র নৃশংস অপরাধগুলো আজও মানুষের মনে গভীর দাগ কাটে। গেসি’র জীবনের এক ভয়ংকর দিক ছিল, যা অনেকের কাছেই ছিল অজানা।

বাইরের জগতে তিনি ছিলেন একজন হাসিখুশি, মিশুক মানুষ। স্থানীয় হাসপাতাল ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে শিশুদের মনোরঞ্জন করতেন তিনি। কিন্তু এর আড়ালে তিনি ছিলেন একজন সিরিয়াল কিলার, যিনি দিনের আলোয় একজন ভালো মানুষের মুখোশ পরে ঘৃণ্য অপরাধ করতেন।

১৯৮০ সালে গেসিকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বিচারের রায় শোনার পর তিনি বলেছিলেন, “আমি এমন কিছু অনুভব করতে পারছি না যা আমি এখনো বুঝি না।”

তাঁর কোনো অনুশোচনা ছিল না। মৃত্যুদণ্ডের সময় গেসি’র বয়স ছিল ৫২ বছর। তাঁকে মারাত্মক ইনজেকশন (lethal injection) প্রয়োগ করা হয়।

সাধারণত এই প্রক্রিয়ায় তিনটি রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয়: একটি চেতনা ফেরানোর জন্য, একটি শ্বাস বন্ধ করার জন্য এবং আরেকটি হৃদপিণ্ড বন্ধ করার জন্য। কিন্তু সে সময়, ইনজেকশনের লাইনে ত্রুটি দেখা দেয়, ফলে দ্বিতীয় রাসায়নিকটি সম্পূর্ণরূপে প্রবেশ করতে প্রায় ১৮ মিনিট সময় লেগেছিল, যা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি।

মৃত্যুর আগে গেসি তার শেষ ইচ্ছানুসারে কেন্টাকি ফ্রাইড চিকেন (Kentucky Fried Chicken) -এর খাবার খান। তিনি এক বালতি চিকেন, ১২টি ফ্রাইড প্রন, এক পাউন্ড স্ট্রবেরি, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই এবং একটি ডায়েট कोक চেয়েছিলেন।

গেসি’র মৃত্যুদণ্ডের দিন শিকাগোর সিটি হলের বাইরে প্রায় ১০০০ লোক জড়ো হয়েছিল। তারা বেলুন উড়িয়ে এবং ব্যঙ্গাত্মক প্ল্যাকার্ড হাতে গেসি’র প্রতি তাদের ঘৃণা প্রকাশ করে। অনেকে মনে করেন, গেসি’র প্রাপ্য শাস্তি পেতে অনেক দেরি হয়েছে।

গেসি’র অপরাধগুলো নিয়ে পরবর্তীতে বেশ কয়েকটি তথ্যচিত্র (documentary) নির্মিত হয়েছে। এর মধ্যে নেটফ্লিক্সের ‘কনভারসেশনস উইথ আ কিলার: দ্য জন ওয়েইন গেসি টেপস’ (Conversations with a Killer: The John Wayne Gacy Tapes) অন্যতম।

এছাড়া, ‘জন ওয়েইন গেসি: ডেভিল ইন ডিসগাইজ’ (John Wayne Gacy: Devil in Disguise) শিরোনামের একটি ছয় পর্বের তথ্যচিত্রও ব্যাপক দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে। বর্তমানে তাঁর জীবন নিয়ে একটি নতুন নাটক নির্মাণের কাজ চলছে।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *