যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে বিশাল বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে বহুজাতিক ঔষধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি জনসন অ্যান্ড জনসন (Johnson & Johnson)। আগামী চার বছরে তারা দেশটির বিভিন্ন খাতে ৫৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে।
এই বিনিয়োগের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন চারটি উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, এই বিনিয়োগ তাদের পূর্বের চার বছরের বিনিয়োগের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেশি।
জনসন অ্যান্ড জনসন কর্তৃপক্ষের ধারণা, এই বিনিয়োগের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে বছরে প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি প্রভাব পড়বে। নতুন বিনিয়োগের প্রথম ধাপ হিসেবে, উত্তর ক্যারোলিনায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন একটি কারখানা তৈরি করা হবে, যা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের জন্যই নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে না, বরং বিশ্বজুড়ে রোগীদের জন্য অত্যাধুনিক ঔষধ উৎপাদনেও সাহায্য করবে।
কোম্পানিটির চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জোয়াকিন দুয়াটো এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “আমাদের এই বর্ধিত বিনিয়োগের শুরু হচ্ছে উত্তর ক্যারোলিনার একটি অত্যাধুনিক কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মাধ্যমে।
এই পদক্ষেপ একদিকে যেমন যুক্তরাষ্ট্রে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে, তেমনি উন্নত মানের ঔষধ তৈরি করে আমেরিকা এবং সারা বিশ্বের রোগীদের চিকিৎসা সহজ করবে।” তিনি আরও জানান, উত্তর ক্যারোলিনার উইলসন শহরে এই কারখানাটি স্থাপন করা হবে।
অন্যান্য তিনটি কারখানার স্থান এখনো প্রকাশ করা হয়নি। নতুন চারটি কারখানা তৈরি ছাড়াও, জনসন অ্যান্ড জনসন তাদের বিদ্যমান কিছু কারখানারও সম্প্রসারণ করবে।
একইসঙ্গে, গবেষণা ও উন্নয়ন (Research and Development) অবকাঠামো এবং প্রযুক্তিতেও তারা বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে। শুধু জনসন অ্যান্ড জনসনই নয়, আরও বেশ কয়েকটি কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে তাদের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এর আগে, তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি (Taiwan Semiconductor Manufacturing Co.) ঘোষণা করেছে যে তারা যুক্তরাষ্ট্রে ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। এর আগে কোম্পানিটি ৬৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছিল।
এছাড়া, অ্যাপলও (Apple) আগামী চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রে ৫০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে। এর মধ্যে রয়েছে নতুন কর্মী নিয়োগ এবং টেক্সাসে একটি নতুন সার্ভার কারখানা তৈরি করা।
এই বিশাল বিনিয়োগের খবর বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জনসন অ্যান্ড জনসনের ঔষধ ও স্বাস্থ্যসেবা পণ্যগুলো বিশ্বজুড়ে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অত্যন্ত পরিচিত।
এই বিনিয়োগের ফলে উন্নত প্রযুক্তির ঔষধ তৈরি এবং বিশ্ববাজারে এর সহজলভ্যতা বাড়বে, যা বাংলাদেশের রোগীদের জন্য একটি ইতিবাচক দিক। যদিও বিনিয়োগের পরিমাণ বিশাল, বাংলাদেশি টাকায় এর সম্ভাব্য পরিমাণ হিসাব করলে এটি প্রায় ৬০০,০০০ কোটি টাকার বেশি (ডলার প্রতি ১১০ টাকা ধরে)।
এই ধরনের বড় বিনিয়োগ আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের ঔষধ শিল্পের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস (Associated Press)