ট্রাম্পের পরিকল্পনা: বিভাজনের মুখে রিপাবলিকানদের ঐক্য?

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত একটি বিশাল কর ও ব্যয়ের বিল নিয়ে রিপাবলিকানদের মধ্যে বিভেদ দেখা দিয়েছে। স্পিকার মাইক জনসন এই গুরুত্বপূর্ণ বিলটি পাসের জন্য দলের ঐক্য ধরে রাখার চেষ্টা করছেন, কিন্তু দলের অভ্যন্তরে বিভিন্ন বিষয়ে মতানৈক্য দেখা দেওয়ায় তা কঠিন হয়ে পড়েছে।

এই বিলটি মে মাসের মধ্যে পাস করার পরিকল্পনা রয়েছে, তবে এর আগে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হবে।

এই বিলে মেডিকেড (Medicaid) এবং খাদ্য স্ট্যাম্পের মতো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কর্মসূচিগুলোতে পরিবর্তনের প্রস্তাব রয়েছে। এছাড়া, রাজ্যের ও স্থানীয় করের (State and Local Taxes – SALT) উপর একটি নির্দিষ্ট সীমা আরোপের প্রস্তাব নিয়েও বিতর্ক চলছে।

দলের কট্টরপন্থী এবং উদারপন্থী উভয় গ্রুপের সদস্যরাই এই বিলের কিছু কিছু প্রস্তাবের বিরোধিতা করছেন। বিশেষ করে, উচ্চ করের রাজ্যগুলো থেকে আসা কয়েকজন রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা, যেমন নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সি এবং ক্যালিফোর্নিয়ার প্রতিনিধিরা, স্টেট ও লোকাল ট্যাক্স-এর উপর প্রস্তাবিত সীমা বাড়ানোর বিষয়ে তীব্র আপত্তি জানাচ্ছেন।

বিলটির কিছু অংশে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেমন টিপস, ওভারটাইম বেতন এবং গাড়ির ঋণের সুদের উপর ফেডারেল ট্যাক্স বাতিল করা। এছাড়া, শিশুদের জন্য একটি নতুন সঞ্চয় হিসাব খোলার প্রস্তাব রয়েছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে “MAGA” সঞ্চয় হিসাব।

এই বিলের মাধ্যমে সরকারের ঋণ গ্রহণের সীমা বাড়ানোরও প্রস্তাব করা হয়েছে, যা আগামী কয়েক বছরের জন্য প্রায় ৪ ট্রিলিয়ন ডলারের সমস্যা সমাধান করবে।

ডেমোক্র্যাটরা এই বিলের বিরোধিতা করছেন এবং অভিযোগ করেছেন যে এর ফলে লাখ লাখ মানুষ স্বাস্থ্য বীমা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। যদিও রিপাবলিকানরা তাদের হিসাব নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছেন।

তবে, উভয় দলের মধ্যে আলোচনা এখনও চলছে এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অনেক কিছুই বিবেচনা করা হবে। এই বিলটি পাসের জন্য রিপাবলিকানদের প্রায় সর্বসম্মত সমর্থন প্রয়োজন, যা বর্তমানে বেশ কঠিন বলেই মনে হচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপের সম্ভাবনাও রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ এই রাজনৈতিক অস্থিরতা বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক নীতি আন্তর্জাতিক বাজার এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

তাই, এই বিলের চূড়ান্ত রূপ এবং এর প্রভাব সম্পর্কে সকলেরই সচেতন থাকা প্রয়োজন।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *