ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের স্মৃতি আজও বয়ে বেড়াচ্ছেন স্টিভেন উইয়ারসিং। ২০১১ সালের ২২শে মে, আমেরিকার মিসৌরির জপলিন শহরে আঘাত হানে এক বিধ্বংসী টর্নেডো, যা ছিল ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
সেই ঘূর্ণিঝড়ে অলৌকিকভাবে বেঁচে ফিরেছিলেন ১৬ বছর বয়সী কিশোর স্টিভেন। এরপর কঠিন এক লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে তাকে। সেই ভয়ানক অভিজ্ঞতার রেশ ধরেই জীবনের নতুন পথে হেঁটেছেন তিনি, গড়ে তুলেছেন ভালোবাসার এক সংসার।
জপলিন টর্নেডোর তাণ্ডবে ১৫৮ জন মানুষ নিহত হয়েছিলেন। স্টিভেন উইয়ারসিং নামের সেই কিশোরের জীবনও ওলট-পালট হয়ে গিয়েছিল।
টর্নেডোর ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বেঁচে ফেরার পর তিনি বিরল এক ছত্রাক সংক্রমণের শিকার হন। কঠিন সেই সময়ে, তিনি তাঁর বাবার কাছ থেকে সীমাহীন সমর্থন পেয়েছিলেন। বাবার ভালোবাসাই ছিল তাঁর সবচেয়ে বড় শক্তি।
বর্তমানে ৩০ বছর বয়সী স্টিভেন চার সন্তানের জনক, পঞ্চম সন্তান আসার অপেক্ষায় দিন গুনছেন। সম্প্রতি নেটফ্লিক্সের একটি তথ্যচিত্রে তাঁর এই কঠিন লড়াইয়ের কথা তুলে ধরা হয়েছে।
তথ্যচিত্রটির নাম ‘দ্য টোয়েস্টার: কট ইন দ্য স্টর্ম’। স্টিভেন জানান, ঝড়ের পরে তাঁর জীবনের অভিজ্ঞতাগুলো তাঁকে আজকের মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছে।
তাঁর বাবা ডেভিড উইয়ারসিং ছিলেন তাঁর অনুপ্রেরণা।
স্টিভেন বলেন, “বাবা আমার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন। আমাদের মধ্যে মতের অমিল হলেও, আমরা ছিলাম সবচেয়ে ভালো বন্ধু।”
বাবার কাছ থেকে পাওয়া ভালোবাসা এবং কঠিন সময়ে তাঁর পাশে থাকার বিষয়টি স্টিভেনকে একজন ভালো বাবা হতে শিখিয়েছে। ডেভিড সবসময় তাঁর সন্তানদের পাশে থাকার পরামর্শ দিতেন।
কঠিন হলেও, সন্তানদের ভালো ভবিষ্যতের জন্য নেওয়া বাবার প্রতিটি পদক্ষেপকে তিনি সম্মান করেন।
২০২১ সালের ২১শে অক্টোবর ফুসফুস ও হাড়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ডেভিডের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর।
টর্নেডোর ঘটনার কিছুদিনের মধ্যেই স্টিভেন নিজেও বাবা হন। ২০১৩ সালের ২৩শে মে, টর্নেডোর ঘটনার ঠিক দুই বছর পর তাঁর প্রথম কন্যাসন্তানের জন্ম হয়।
বাবা হওয়ার পর স্টিভেন তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া শিক্ষাগুলো কাজে লাগিয়েছেন। তিনি সবসময় চেষ্টা করেছেন তাঁর সন্তানদের পাশে থাকতে, তাদের ভালোবেসে আগলে রাখতে।
তাঁর সন্তানরাও সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া তথ্যচিত্রটি দেখে তাদের বাবার কঠিন সংগ্রামের কথা জানতে পেরেছে।
স্টিভেন উইয়ারসিং তাঁর এই অভিজ্ঞতা থেকে শিখেছেন, পরিবারের গুরুত্ব অপরিসীম। কঠিন সময়ে পরিবারের মানুষগুলোই সবসময় পাশে থাকে।
তিনি আরও শিখেছেন, জীবনে কখনোই হাল ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়, সবসময় লড়ে যেতে হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো জীবনকে উপভোগ করা।
আমাদের একটাই জীবন, তাই প্রতিটি মুহূর্তকে উপভোগ করা উচিত।
তথ্য সূত্র: পিপল