ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জের (British Virgin Islands) একটি ক্ষুদ্র দ্বীপ, জোস্ট ভ্যান ডাইক (Jost Van Dyke)। এই দ্বীপটি একদিকে যেমন তার উজ্জ্বল সমুদ্র সৈকত আর পানশালাগুলির জন্য পরিচিত, তেমনই অন্যদিকে শান্ত আর প্রকৃতির কাছাকাছি থাকার সুযোগও রয়েছে এখানে।
আসুন, এই দ্বীপের আকর্ষণীয় দিকগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
জোস্ট ভ্যান ডাইক, ক্যারিবীয় অঞ্চলের একটি অন্যতম জনপ্রিয় গন্তব্য। এখানকার সাদা বালির সৈকত, স্বচ্ছ নীল জলরাশি আর মনোরম পরিবেশ পর্যটকদের মন জয় করে।
এই দ্বীপটি একদিকে যেমন “পেইনকিলার” ককটেল-এর জন্মস্থান হিসাবে বিখ্যাত, তেমনই “সগি ডলার বার” (Soggy Dollar Bar)-এর মতো জমজমাট পানশালার জন্যও পরিচিত।
যারা একটু বেশি শান্ত ও নিরিবিলি পরিবেশে সময় কাটাতে চান, তাঁদের জন্যও এখানে রয়েছে আকর্ষণীয় সব ব্যবস্থা।
এখানে থাকার জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সুন্দর ভিলা ও রিসোর্ট। যেমন, “দ্য হাইডআউট” (The Hideout), যেখানে আপনি সমুদ্রের একেবারে কাছাকাছি থাকতে পারবেন।
এছাড়াও, “হোয়াইট বে ভিলাস অ্যান্ড বিচ ক্লাব” (White Bay Villas & Beach Club)-এ রয়েছে অত্যাধুনিক সব ভিলা, যেখান থেকে দ্বীপের সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করা যায়।
“স্যান্ডক্যাসল হোটেল অ্যাট সগি ডলার” (Sandcastle Hotel at Soggy Dollar)-এ থাকলে আপনি সরাসরি সমুদ্রের ধারে মজাদার পরিবেশে সময় কাটাতে পারবেন।
জোস্ট ভ্যান ডাইক-এ ঘুরে বেড়ানোর মতো অনেক সুন্দর জায়গা রয়েছে।
এখানকার “হোয়াইট বে বিচ”-এ (White Bay Beach) সময় কাটানো এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
এছাড়াও, “গ্রেট হারবার”-এ (Great Harbour) রয়েছে বিভিন্ন ওয়াটার স্পোর্টসের ব্যবস্থা।
যারা একটু অন্যরকম অভিজ্ঞতা চান, তাঁরা “ওশেন স্পা”-তে (Ocean Spa) যেতে পারেন, যেখানে সমুদ্রের মাঝে স্পা-র ব্যবস্থা রয়েছে।
এখানকার “বাবলি পুল” (Bubbly Pool) -এ প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি হওয়া “জ্যাকুজি” তে গা ডুবিয়ে প্রকৃতির আনন্দ উপভোগ করা যায়।
দ্বীপটিতে ভোজনরসিকদের জন্যেও রয়েছে নানা আয়োজন।
“সগি ডলার বার”-এ (Soggy Dollar Bar) আপনি “পেইনকিলার” ককটেল-এর আসল স্বাদ নিতে পারবেন।
“ফক্সিস টামারিন্ড বার অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট” (Foxy’s Tamarind Bar and Restaurant)-এ লাইভ মিউজিক ও স্থানীয় খাবারের স্বাদ উপভোগ করা যেতে পারে।
যারা একটু শান্ত পরিবেশ পছন্দ করেন, তারা “হেন্ডোস হাইডআউট”-এ (Hendo’s Hideout) যেতে পারেন, যেখানে নানান সুস্বাদু খাবার পাওয়া যায়।
এছাড়াও, “এবেস বাই দ্য সি” (Abe’s by the Sea)-তে স্থানীয় নানান পদ চেখে দেখতে পারেন।
রাতের বেলা জোস্ট ভ্যান ডাইক-এর মজা কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
“ফক্সিস টামারিন্ড বার অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট”-এ (Foxy’s Tamarind Bar and Restaurant) আয়োজিত “ফুল মুন পার্টি” (Full Moon Party) এখানকার রাতের প্রধান আকর্ষণ।
যেহেতু জোস্ট ভ্যান ডাইক-এর নিজস্ব কোনো বিমানবন্দর নেই, তাই এখানে যেতে হলে প্রথমে টর্টোলা দ্বীপে (Tortola) যেতে হয়।
টর্টোলা-তে টেরেন্স বি. লেটসোম ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট (Terrance B. Lettsome International Airport – EIS) অবস্থিত।
টর্টোলা থেকে ফেরি, ওয়াটার ট্যাক্সি অথবা প্রাইভেট বোটে করে খুব সহজেই জোস্ট ভ্যান ডাইক-এ যাওয়া যায়।
ফেরি করে যেতে সময় লাগে প্রায় ২৫ মিনিট এবং জনপ্রতি টিকিটের দাম প্রায় ৪০ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় আনুমানিক ৪,৭০০ টাকা)।
জোস্ট ভ্যান ডাইক-এর দক্ষিণ উপকূল পায়ে হেঁটে ঘোরার জন্য উপযুক্ত। এছাড়া, আপনি চাইলে গাড়ি ভাড়া করেও দ্বীপটি ঘুরে দেখতে পারেন।
ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত এখানকার আবহাওয়া বেশ মনোরম থাকে, তাই এই সময়ে এখানে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ে।
তবে জুন থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত এখানে ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা থাকে।
তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার