মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের একটি আদালতের বিচারক, যিনি একজন অভিবাসন আইন কর্মকর্তাদের হাত থেকে বাঁচতে এক ব্যক্তিকে সাহায্য করেছিলেন, বর্তমানে বিচারের সম্মুখীন হচ্ছেন। এই ঘটনায় বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার মিলওয়াকির ফেডারেল আদালতের বাইরে প্রায় একশ জন বিক্ষোভকারী জড়ো হন। তাদের এই সমাবেশের মূল কারণ ছিল, স্থানীয় সার্কিট জজ, হানা ডুগান এর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রতিবাদ জানানো।
অভিযোগ অনুযায়ী, বিচারক ডুগান একজন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে গ্রেফতারের হাত থেকে বাঁচতে সাহায্য করেছিলেন।
অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিচারক ডুগানের ছয় বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। জানা গেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি, এডুয়ার্ডো ফ্লোরেস-রুইজ, ২০১৮ সালে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন। এর আগে ২০১৩ সালে তাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করা হয়েছিল।
আদালতের নথি থেকে জানা যায়, গত এপ্রিল মাসের ১৮ তারিখে ফ্লোরেস-রুইজের বিরুদ্ধে একটি মামলার শুনানির সময় বিচারক ডুগান জানতে পারেন যে, অভিবাসন বিভাগের কর্মকর্তারা তাকে গ্রেফতার করতে এসেছেন। এরপর তিনি ফ্লোরেস-রুইজ এবং তার আইনজীবীকে পেছনের দরজা দিয়ে নিরাপদে বের করে দেন। যদিও পরে অভিবাসন কর্মকর্তারা আদালতের বাইরে থেকে তাকে আটক করতে সক্ষম হন।
বিচারক ডুগানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, বিচার কাজে বাধা দেওয়া এবং গ্রেফতার এড়াতে সাহায্য করা। তবে, বিচারক ডুগান তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার আইনজীবীরা আদালতের কাছে যুক্তি দেখিয়েছেন যে, বিচারক হিসেবে ডুগানের কিছু বিশেষ অধিকার রয়েছে এবং এই ঘটনার জন্য তিনি দায়বদ্ধ নন।
তারা আরও জানান, আদালতের কার্যক্রম পরিচালনার সময় তিনি কেবল লোকজনকে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন।
ডুগানের আইনজীবীরা তাদের যুক্তির স্বপক্ষে একটি সাম্প্রতিক সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কথা উল্লেখ করেছেন। যেখানে বলা হয়েছে, সাবেক প্রেসিডেন্টদের সরকারি কাজের জন্য দায়বদ্ধ করা যায় না।
বিক্ষোভকারীরা এসময় “গণতন্ত্রের হাত দাও”, “বিচারকের মুক্তি চাই” এবং “সংহতি” সহ বিভিন্ন স্লোগান দেয়।
এই ঘটনার জেরে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং একজন বিচারকের ক্ষমতা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। মামলার পরবর্তী কার্যক্রম এখনো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন