ফিলিস্তিনি অ্যাক্টিভিস্ট মাহমুদ খলিলকে মুক্তি দিতে বাধ্য ট্রাম্প প্রশাসন!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ফিলিস্তিনি অধিকারকর্মী মাহমুদ খলিলের আটকের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছেন একজন ফেডারেল বিচারক। ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন খলিলকে আটক করে রেখেছিল, যাদের অভিযোগ ছিল ফিলিস্তিনপন্থী হিসেবে তার বক্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির জন্য হুমকি স্বরূপ।

নিউ জার্সি জেলার বিচারক মাইকেল ই. ফারবিয়ার্জ খলিলের হেবিয়াস কর্পাস আবেদন মঞ্জুর করে সরকারের প্রতি এই নির্দেশ দেন। আদালতের এই আদেশের ফলে সরকারের কাছে আপিল করার সুযোগ থাকছে, তবে তার জন্য শুক্রবার সকাল ৯:৩০ মিনিট পর্যন্ত সময় রয়েছে।

মাহমুদ খলিল, যিনি কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছিলেন। তার ফিলিস্তিনপন্থী রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তাকে আটক করা হয়। খলিলের আটকের ফলে তিনি তার সন্তানের জন্ম এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি।

বিচারক ফারবিয়ার্জ তার আদেশে উল্লেখ করেন, খলিলকে আটক রাখার সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তার আবেদন গ্রহণ করা হলো। এর ফলে, সরকারের কর্মকর্তাদের খলিলকে দেশ থেকে বিতাড়িত করার প্রক্রিয়া আপাতত বন্ধ রাখতে হবে।

খলিলের আইনজীবী অ্যামি গ্রিয়ার এই রায়কে ন্যায়বিচারের পথে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “আজ বিচারক যা খুঁজে পেয়েছেন, তা আমরা আগেই জানতাম—রুবির সিদ্ধান্ত ছিল অসাংবিধানিক। রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে কাউকে আটক করা যায় না। আজ আমরা ন্যায়বিচারের প্রথম পদক্ষেপ দেখলাম, তবে মাহমুদ তার স্ত্রী এবং সন্তানের কাছে ফিরে না আসা পর্যন্ত আমরা লড়াই চালিয়ে যাব।

খলিলের স্ত্রী নূর আব্দুল্লাহ এক বিবৃতিতে বলেছেন, মাহমুদকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে নিউ ইয়র্কের বাড়িতে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক। তিনি বলেন, “আমরা গত তিন মাসের বেশি সময় ধরে এই মুহূর্তটির অপেক্ষায় ছিলাম। মাহমুদকে দ্রুত ও নিরাপদে নিউ ইয়র্কে ফিরিয়ে আনা হোক, যেখানে সে আমার এবং আমাদের নবজাতক শিশু দীনের সঙ্গে থাকতে পারবে।

আদালতের এই রায়ের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার সংগঠনগুলো সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (American Civil Liberties Union) -এর সিনিয়র কাউন্সেল ব্রেট ম্যাক কফম্যান এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আজকের এই রায় সংবিধান এবং নাগরিক ও অ-নাগরিক—সবার অধিকারের জন্য একটি বিশাল জয়। কোনো ব্যক্তিকে তার রাজনৈতিক বিশ্বাসের কারণে বন্দী বা নির্বাসিত করা উচিত নয়।

ট্রাম্প প্রশাসন খলিলের কার্যক্রমকে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির জন্য হুমকি হিসেবে দেখেছিল। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, খলিলের ফিলিস্তিনপন্থী কার্যকলাপের কারণে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

এই ঘটনার জেরে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা খলিলের মুক্তি চেয়েছেন এবং তার আটককে মৌলিক মানবাধিকারের লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করেছেন।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *