ট্রাম্পের রোষানলে জজ বোয়াসবার্গ: কেন এত বিতর্ক?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন বিচারক ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের বিরুদ্ধে রায় দেওয়ার পর সমালোচনার মুখে পড়েছেন। ওয়াশিংটন ডিসি-র ফেডারেল কোর্টের প্রধান বিচারপতি জেমস বোয়াসবার্গকে নিয়ে এই ঘটনা ঘটেছে। জানা গেছে, অভিবাসন বিষয়ক একটি মামলায় ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির বিপক্ষে রায় দেওয়ার পরই সাবেক প্রেসিডেন্টের রোষানলে পড়েন তিনি।

বিচারপতি বোয়াসবার্গ আইন অঙ্গনে সুপরিচিত এবং বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছেও তিনি বেশ জনপ্রিয়। তিনি ২০১৬ সালের নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ বিষয়ক এফবিআইয়ের তদন্তের উপাদান প্রকাশ করেছিলেন। এছাড়াও, হিলারি ক্লিনটনের ব্যক্তিগত সার্ভার থেকে কিছু ই-মেইল প্রকাশেরও ব্যবস্থা করেন তিনি। বোয়াসবার্গের এমন কিছু সিদ্ধান্ত ট্রাম্পের রাজনৈতিক স্বার্থের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল।

অন্যদিকে, বোয়াসবার্গ ৬ই জানুয়ারির দাঙ্গাকারীদের কম শাস্তি দেওয়ার জন্য পরিচিত ছিলেন। ফেডারেল ট্রেড কমিশনের (FTC) ফেসবুকের মূল কোম্পানি মেটা’র বিরুদ্ধে মামলার শুনানিতেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।

বোয়াসবার্গের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের ক্ষোভের কারণ হলো, তিনি অভিবাসন বিষয়ক একটি মামলায় ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন। ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বোয়াসবার্গকে ‘বামপন্থী উন্মাদ বিচারক’ হিসেবে অভিহিত করেন এবং তার অভিশংসন দাবি করেন। এমনকি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টসও ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের নিন্দা করেছেন।

বোয়াসবার্গকে একজন ‘নীতিবান এবং ন্যায়বিচারক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, এমন মানুষেরও অভাব নেই। বিচার বিভাগের এক প্রাক্তন প্রসিকিউটর সিএনএনকে বলেছেন, “বোয়াসবার্গ কোনো বিপ্লবী বিচারক নন। তিনি সবসময়ই ন্যায়বিচার করেছেন এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। তার আদালতে গেলে সবাই জানত যে তিনি নিয়ম অনুসরণ করবেন।”

বোয়াসবার্গের জন্ম ওয়াশিংটন ডিসিতে। তিনি ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতক এবং ল’ পাশ করেন। এরপর তিনি বিচার বিভাগে যোগ দেন এবং হত্যা মামলার বিচারক হিসেবে কাজ করেন। জর্জ ডব্লিউ বুশ তাকে ডিসি সুপিরিয়র কোর্টে এবং বারাক ওবামা ডিসি ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে বিচারক হিসেবে নিয়োগ দেন। বোয়াসবার্গকে সিনেট ৯৬-০ ভোটে অনুমোদন করে।

বোয়াসবার্গের এই ঘটনা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং আইনের শাসনের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের গুরুত্বের বিষয়টি নতুন করে সামনে নিয়ে এসেছে। যেকোনো গণতান্ত্রিক সমাজে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা অত্যন্ত জরুরি।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *