নিউ ইয়র্ক থেকে: কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র মাহমুদ খলিলকে মুক্তি দিতে নির্দেশ দিয়েছেন একজন মার্কিন ফেডারেল বিচারক। গত মার্চ মাসের শুরুতে তাকে অভিবাসন কেন্দ্রে আটক করা হয়েছিল।
ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভে অংশগ্রহণের কারণে ট্রাম্প প্রশাসন তাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করতে চেয়েছিল।
বিচারক মাইকেল ফারবিয়ার্জ নিউ জার্সিতে এক শুনানিতে জানান, সরকার কোনো প্রমাণ পেশ করতে পারেনি যে খলিল দেশ ছেড়ে পালাতে পারেন অথবা সমাজের জন্য বিপজ্জনক। তিনি আরও বলেন, “এখানেই বিষয়টির সমাপ্তি।
আদালতের নির্দেশে, লুইজিয়ানার একটি ডিটেনশন সেন্টার থেকে শুক্রবার খলিলকে মুক্তি দেওয়া হয়। বিচারক জানান, সরকার আটকের মানদণ্ড পূরণ করতে “সম্পূর্ণ ব্যর্থ” হয়েছে।
প্রায় এক ঘণ্টার টেলিফোন সংলাপে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মাহমুদ খলিল ছিলেন সেই ছাত্রদের মধ্যে প্রথম, যাদের ইসরায়েলের গাজায় চালানো ধ্বংসযজ্ঞের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাস বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার কারণে ট্রাম্প প্রশাসন গ্রেপ্তার করেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারকো রুবিও বলেছেন, খলিলের যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান আমেরিকান পররাষ্ট্রনীতির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, তাই তাকে দেশ থেকে বের করে দেওয়া উচিত।
বিচারক এর আগে রায় দিয়েছিলেন যে, এই যুক্তিতে খলিলকে নির্বাসিত করা যাবে না, তবে গ্রিন কার্ডের আবেদনে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
খলিল অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
খলিলের আইনজীবীরা হয় তাকে জামিনে মুক্তি দিতে অথবা লুইজিয়ানার কারাগার থেকে নিউ জার্সিতে সরিয়ে নেওয়ার আবেদন করেছিলেন, যাতে তিনি তার স্ত্রী এবং নবজাতক ছেলের কাছাকাছি থাকতে পারেন। তারা দুজনেই মার্কিন নাগরিক।
বিচারক উল্লেখ করেন, ক্যাম্পাস বিক্ষোভের সময় এবং আটকের পর খলিল একজন পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন।
গত ৮ মার্চ, ম্যানহাটানে নিজের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে তাকে আটক করা হয়।
ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তার আইনজীবীদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসন মূলত মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আঘাত হানতে চাইছে।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এই ছাত্র বিক্ষোভের সময় আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র ও মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেন।
বিক্ষোভে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, তবে সংবাদমাধ্যমে তার পরিচিতি এবং প্রকাশ্যে কথা বলার কারণে তিনি সমালোচকদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিলেন।
ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তি দিয়েছিল, যারা এ ধরনের বিক্ষোভে অংশ নেয়, তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ইহুদিবিদ্বেষী হওয়ায় তাদের দেশ থেকে বিতাড়িত করা উচিত।
বিচারক উল্লেখ করেন, খলিলের কোনো অপরাধের রেকর্ড নেই এবং সরকার এমন কোনো প্রমাণ পেশ করতে পারেনি, যা থেকে বোঝা যায় যে তিনি কোনো সহিংসতা বা সম্পত্তি ধ্বংসের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস