ভুল: যুক্তরাষ্ট্রে ফিরছেন বিতাড়িত ব্যক্তি, রায় দিল আদালত!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একজন ভুল করে বিতাড়িত হওয়া ব্যক্তিকে ফিরিয়ে আনতে দেশটির সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন একজন ফেডারেল বিচারক। শুক্রবার এই রায় দেন মেরিল্যান্ডের ইউএস ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের বিচারক পাওলা জিনিস।

বিতাড়িত হওয়া ব্যক্তিটি সালভাদরের নাগরিক কিলমার অ্যাব্রেগো গার্সিয়া।

এই রায়ে বিচারক সরকারপক্ষকে আগামী ৭ই এপ্রিল, সোমবার রাত ১১টা ৫৯ মিনিটের মধ্যে অ্যাব্রেগো গার্সিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন। জানা গেছে, গত মাসে তাকে ভুল করে এল সালভাদরে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।

ট্রাম্প প্রশাসন আদালতের শুনানিতে স্বীকার করেছে যে, প্রশাসনিক ত্রুটির কারণে তারা মেরিল্যান্ডের এই অভিবাসী বাবাকে, যিনি তিনজন সন্তানের জনক, বিতাড়িত করেছে। তবে তারা জানায়, বর্তমানে তিনি সালভাদরের কর্তৃপক্ষের হেফাজতে থাকায় তাকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।

ধারণা করা হচ্ছে, এল সালভাদরে অভিবাসন বিষয়ক বিতাড়ন প্রক্রিয়া নিয়ে চলমান আইনি লড়াইয়ের মধ্যে এই প্রথম প্রশাসন তাদের ভুলের কথা স্বীকার করল।

বিচারক জিনিস তার রায়ে বলেন, “অবশ্যই, এই মামলা অ্যাব্রেগো গার্সিয়া এবং তার পরিবারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি মনে করি, রায় দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করার কোনও সুযোগ নেই।”

শুনানির সময় বিচারক জিনিস অ্যাব্রেগো গার্সিয়ার এল সালভাদরে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এর কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, অভিবাসন বিষয়ক একজন বিচারক এর আগে অ্যাব্রেগো গার্সিয়াকে বিতাড়ন থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এর অর্থ হলো, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করে এল সালভাদরে ফেরত পাঠালে তিনি সেখানে নির্যাতনের শিকার হতে পারেন। যদিও তিনি এখনও বিতাড়নের যোগ্য ছিলেন, তবে তাকে এল সালভাদরে পাঠানো যাবে না।

বিচারক তার রায়ে উল্লেখ করেন, গত মাসে অ্যাব্রেগো গার্সিয়াকে কোনো “বৈধ ভিত্তি ছাড়াই” আটক করা হয়েছিল এবং “আইনের কোনো যুক্তি ছাড়াই” বিতাড়িত করা হয়।

শুনানির সময় বিচারক অ্যাব্রেগো গার্সিয়ার কুখ্যাত আন্তর্জাতিক অপরাধী চক্র এমএস-১৩ গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন। ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা এই অভিযোগ জানালেও বিচারক এর স্বপক্ষে পর্যাপ্ত প্রমাণ পাননি।

বিচারক বলেন, “যখন কাউকে এ ধরনের একটি হিংস্র এবং অপরাধমূলক সংগঠনের সদস্য হওয়ার অভিযোগ আনা হয়, তখন তার বিরুদ্ধে অভিযোগনামা, অভিযোগ অথবা একটি অপরাধমূলক প্রক্রিয়া শুরু করা হয়, যেখানে একটি সুসংহত প্রক্রিয়া থাকে।”

বিচার বিভাগ অতিরিক্ত কোনো প্রমাণ জমা দেয়নি। বিচারকের উদ্দেশ্যে সরকারি আইনজীবী এরেজ রেউভেনি বলেন, “সরকার এখানে কোনো প্রমাণ পেশ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে, একজন ব্যক্তিকে ভুল করে বিতাড়ন এবং পরবর্তীতে তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য আদালতের হস্তক্ষেপ বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। বিচারকের এই রায় অভিবাসন বিষয়ক আইনের জটিলতা এবং একজন ব্যক্তির অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে আদালতের ভূমিকার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *