৮৫ বছরে জুলি ক্রিস্টি: সেরা ২০ সিনেমার তালিকা!

ব্রিটিশ চলচ্চিত্র জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র জুলিয়ে ক্রিস্টি ৮৫ বছর বয়সেও দর্শকদের হৃদয়ে উজ্জ্বল হয়ে আছেন। সিনেমায় অভিনয়ের জাদুকরী ক্ষমতা দিয়ে তিনি জয় করেছেন কোটি দর্শকের মন। তাঁর অনবদ্য অভিনয়শৈলী আজও সিনেমা প্রেমীদের কাছে বিশেষভাবে আদৃত।

এই বিশেষ প্রতিবেদনে, আমরা তাঁর অভিনীত সেরা ২০টি চলচ্চিত্রের দিকে আলোকপাত করব।

জুলিয়ে ক্রিস্টি, যিনি একাধারে অভিনেত্রী এবং সৌন্দর্য্যের প্রতীক হিসাবে পরিচিত, ১৯৪০ সালে ভারতের আসামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর অভিনয় জীবন শুরু হয় ১৯৬০-এর দশকে, এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করেন।

তাঁর অভিনয় করা প্রতিটি চরিত্র যেন জীবন্ত হয়ে উঠত, যা দর্শককে মুগ্ধ করত।

তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে কেনেথ ব্রানা পরিচালিত ‘হ্যামলেট’ (১৯৯৬), যেখানে তিনি ছিলেন গারট্রুডের ভূমিকায়।

এছাড়াও, ‘ইয়াং ক্যাসিডি’ (১৯৬৫) ছবিতে ডেইজি ব্যাটেলস চরিত্রে তাঁর উপস্থিতি দর্শকদের নজর কাড়ে। আয়ারল্যান্ডের প্রেক্ষাপটে নির্মিত এই ছবিতে তাঁর অভিনয় ছিল প্রশংসনীয়।

আশির দশকে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দ্য রেলওয়ে স্টেশন ম্যান’ (১৯৯২) ছবিতে তিনি ডোনাল্ড সাদারল্যান্ডের সঙ্গে জুটি বেঁধেছিলেন, যেখানে ১৯৮০ দশকের ডনেগালে এক বিধবার চরিত্রে অভিনয় করেছেন।

রেবেকা ওয়েস্টের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ‘দ্য রিটার্ন অফ দ্য সোলজার’ (১৯৮২) ছবিতে তাঁর অভিনয় ছিল গভীর এবং মানবিক।

থমাস হার্ডির উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ‘ফার ফ্রম দ্য ম্যাডিং ক্রাউড’ (১৯৬৭) ছবিতে তাঁর অভিনয় ছিল ভিন্নধর্মী, যা দর্শকদের মুগ্ধ করে।

জন শ্লেসিঞ্জারের ‘ডার্লিং’ (১৯৬৫) ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর অস্কার জেতেন, যা তাঁর অভিনয় জীবনের এক উল্লেখযোগ্য মাইলফলক।

একই বছর মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ডক্টর জিভাগো’ (১৯৬৫) ছবিতে ওমর শরিফের বিপরীতে তাঁর অভিনয় আজও দর্শকদের মনে দাগ কাটে।

ওয়ারেন বিটির সঙ্গে তাঁর কাজের অভিজ্ঞতাও বেশ সমৃদ্ধ। ‘হ্যাভেন ক্যান ওয়েট’ (১৯৭৮) ছবিতে তিনি ওয়ারেন বিটির বিপরীতে অভিনয় করেন।

এছাড়া, ‘হিট অ্যান্ড ডাস্ট’ (১৯৮৩) ছবিতে তিনি একজন ইংরেজ নারীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন, যিনি ভারতে আসেন। বিজ্ঞান কল্পকাহিনী নির্ভর ‘ডিমোন সিড’ (১৯৭৭) ছবিতে তাঁর অভিনয় ছিল সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকা।

২০০৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ফাইন্ডিং নেভারল্যান্ড’ ছবিতে তিনি কেট উইন্সলেটের শাশুড়ির চরিত্রে অভিনয় করেন, যা দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়েছিল।

‘আফটারগ্লো’ (১৯৯৭) ছবিতে নিক নোল্টের বিপরীতে তাঁর অভিনয় তাঁকে অস্কারের জন্য মনোনীত করে।

এল.পি. হার্টলির উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ‘দ্য গো-বিটুয়েন’ (১৯৭১) ছবিতে জুলিয়ে ক্রিস্টির অভিনয় ছিল খুবই পরিণত।

তাঁর অভিনয় জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ হলো ‘অ্যাওয়ে ফ্রম হার’ (২০০৬)। সারাহ পলি পরিচালিত এই ছবিতে আলঝাইমার্স রোগে আক্রান্ত এক নারীর চরিত্রে অভিনয় করে তিনি চতুর্থবারের মতো অস্কারের জন্য মনোনয়ন লাভ করেন।

১৯৭৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘শ্যাম্পু’ ছবিতে ওয়ারেন বিটির সঙ্গে তাঁর রসায়ন ছিল দেখার মতো। ফ্রাঁসোয়া ত্রুফোর ‘ফahrenheit 451’ (১৯৬৬) ছবিতে জুলিয়ে ক্রিস্টির অভিনয় ছিল প্রশংসার যোগ্য।

জন শ্লেসিঞ্জারের ‘বিলি লায়ার’ (১৯৬৩) ছবিতে জুলিয়ে ক্রিস্টির অভিনয় তাঁর ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।

১৯৬৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘পেটুলিয়া’ ছবিতেও তাঁর অভিনয় ছিল অসাধারণ। নিকোলাস রোগ পরিচালিত ‘ডোন্ট লুক নাও’ (১৯৭৩) ছবিতে অভিনয় করে তিনি দর্শক ও সমালোচকদের মন জয় করেন।

রবার্ট আল্টম্যানের ‘ম্যাককেব অ্যান্ড মিসেস মিলার’ (১৯৭১) ছবিতে জুলিয়ে ক্রিস্টির অনবদ্য অভিনয় আজও দর্শকদের মুগ্ধ করে।

জুলিয়ে ক্রিস্টির অভিনয় জীবন বহুমুখী প্রতিভার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাঁর চলচ্চিত্রগুলো শুধু বিনোদনই জোগায় না, বরং সমাজের বিভিন্ন দিক নিয়েও আলোচনা করে।

অভিনয়ের প্রতি তাঁর নিবেদন এবং প্রতিটি চরিত্রে গভীরতা দেওয়ার ক্ষমতা তাঁকে কিংবদন্তী করে তুলেছে।

তাঁর অভিনয় জীবনের এই উজ্জ্বল দিকগুলো দর্শকদের মনে চিরকাল অম্লান হয়ে থাকবে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *